ইটের জবাব পাটকেল, অগ্নিমিত্রাকে “তারকাটা মহিলা” সম্বোধন দেবাংশুর!

গতকাল, বুধবার ভোটের প্রচারে বেরিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। নন্দীগ্রামের ভেকুটিয়া এলাকায় জনসংযোগে বেরিয়েছিলেন তৃণমূলের এই সুবক্তা যুবনেতা। গ্রামের ভিতর সরু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল দেবাংশুর প্রচার গাড়ি। একেবারে সামনে টোটোয় মাইক লাগানো ছিল। তারপর বাইকে চেপে দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে গ্রাম পরিক্রমা করছিলেন দেবাংশু।

তখনই গ্রামের একটি জায়গায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাস্তার ধারে বিজেপির পতাকা হাতে, পদ্ম ফুলের টুপি মাথায় জড়ো হন কিছু পুরুষ ও মহিলা। দেবাংশুকে লক্ষ্য করে কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকেন তাঁরা। বাইকের পিছনে বসা দেবাংশুকে ঠেলাঠেলি করেন তারা। বাইকে চাপড় মারতে থাকেন। তবে তৃণমূলের কেউ সেই প্ররোচনায় পা দেয়নি। বরং, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই জায়গা ছেড়ে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দ্রুত বেরিয়ে যান দেবাংশু।

বিষয়টি নিয়ে নিজের ক্ষোভ অবশ্য চেপে রাখেনানি তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, “শুধু স্লোগানই নয়, আমাদের উপর হামলাও চালিয়েছে। মৌখিকভাবে কেউ পলিটিক্যাল স্লোগান দিতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ধাক্কাও মারা হয়েছে। মরার চেষ্টাও করা হয়। আমরা সেখানে কর্মসূচি শেষ করে এক কর্মীর বাড়িতে খেতে যাচ্ছিলাম। সেখানে যাওয়ার পথেই কিছু মানুষ রাস্তা ঘিরে এই ঘটনা করে। সেই বার আমরা চলেও যায়, তারপর ফেরার সময় আবার তারা রাস্তা ঘিরে ধরে।”

দেবাংশুর সংযোজন, “এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। ওদের মতো আমরা যদি গোটা রাজ্যে এমন করি, তাহলে বিজেপি সামলাতে পারবে তো? কিন্তু আমরা ওই কালচারে বিশ্বাস করি না। আমরা সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে যতদূর যেতে হয় যাবো।”

অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিধায়ক তথা মেদিনীপুরের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বসেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে নিশানা করেন অগ্নিমিত্রা। তবে সেখানে সামান্য একটা ভুল করে ফেলেন। যার জন্য পাল্টা দেবাংশুর আক্রমণের মুখে পড়তে হয় অগ্নিমিত্রাকে।

ঠিক কী লিখেছেন অগ্নিমিত্রা?‌ এক্স হ্যান্ডেলে বিজেপি নেত্রী লেখেন, “তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারের জন্য প্রবেশ করতেই গ্রামবাসীরা চোর চোর বলে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের কোনও ব্যাখ্যা দেওয়ার আগেই সেখান থেকে পালিয়েছেন দেবাংশু। তৃণমূল কংগ্রেস, দয়া করে বুঝুন কোনও কথায় আর বাংলার মানুষের হৃদয় গলবে না। বাংলা এখন বিজেপিকে চায়। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি লজ্জা।” এই কথা লেখার মধ্যে ভুলটি হল—কোনও গ্রামবাসী দেবাংশুকে চোর চোর বলে স্লোগান তোলেনি। সেটা করে বিজেপি কর্মীরা।

 

দেবাংশু ঠিক কী জবাব দিলেন?‌ দেবাংশু ভট্টাচার্য এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘”তারকাটা মহিলা। হাতে পদ্ম ফুলের ঝান্ডা নিয়ে গ্রামবাসী? পাবলিককে বোকা ভেবেছেন? গোটা মেদিনীপুর জুড়ে আপনি কি আপনার ভাষা অনুযায়ী একই রকম ‘‌জনরোষ’‌ প্রত্যক্ষ করতে চান? চাইলে বলুন, অ্যারেঞ্জ করিয়ে দিচ্ছি।’‌ বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দেবাংশু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে উদ্দেশ্য করে শুধুমাত্র চোর স্লোগান দেওয়া হয়নি, আমাকে ধাক্কাও দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেলে আঘাত করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হবে। তার পর পুলিশ যে ব্যবস্থা গ্রহণ করার করবে।”

আরও পড়ুন: ভোটের মুখে অশান্ত মুর্শিদাবাদ! বুথের ৫০ মিটারের মধ্যে বিস্ফোরণে হাত উড়ল তৃণমূল কর্মীর

 

 

Previous articleভোটের মুখে অশান্ত মুর্শিদাবাদ! বুথের ৫০ মিটারের মধ্যে বিস্ফোরণে হাত উড়ল তৃণমূল কর্মীর
Next articleসমস্ত চাকরিপ্রার্থীর তালিকা নিয়ম মেনেই পেশ! হাই কোর্টের অভিযোগের পাল্টা SSC চেয়ারম্যানের