সুশাসনের নামে ভাঁওতাবাজি! ছেলের খোঁজে গিয়ে যোগী-পুলিশের হেনস্থার শিকার বাঙালি দম্পতি

নিজের একমাত্র ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে যোগীরাজ্যে (Yogi State) চরম হেনস্থার শিকার মালদহের (Maldah) এক অসহায় দম্পতি। ছেলেকে খুঁজতে উত্তরপ্রদেশে পুলিশের (Uttar Pradesh) দুয়ারে দুয়ারে মাসখানেক ঘুরলেও সহযোগিতা তো দূর বঞ্চনা আর অপমান ছাড়া কিছুই মেলেনি তাঁদের। মালদহের মানিকচকের (Manikchak) ধরমপুরের বাসিন্দা ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে ইন্দ্রনীল ঝা (২৮) দিন কয়েক আগেই কানপুরের গঙ্গাঘাট বাস স্ট্যান্ড থেকে রেল স্টেশন যাওয়ার পথে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের অভিযোগ, কানপুর রেলস্টেশন থেকেই ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল ছেলের। কিন্তু আজ এক মাসের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও খোঁজ নেই তাঁর।

এদিকে নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজে পেতে মানিকচক থানা, মালদা জেলা পুলিশ এমনকি লালবাজার ও ভবানীভবনেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে যোগীরাজ্যের কানপুরের গঙ্গাঘাট থানায় ছেলের খোঁজে গেলে পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। মাস পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ যুবকের মায়ের অভিযোগ যোগীরাজ্যে সুশাসন এসেছে বলে মিথ্যা বুলি আওড়ালেও এক মায়ের আর্তনাদ তারা শুনতে পাচ্ছেন না। মানিকচকের চৌকি মীরদাদপুর পঞ্চায়েতের ধরমপুর এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রনীলের বাবা সাধন ঝা পেশায় এক সেলসম্যান। মা জয়শ্রী ঝা একজন আশা কর্মী। ছেলেকে হারিয়ে মা বলেন, যোগীরাজ্যের পুলিশ আমাদের সঙ্গে ঠিকমতো কথাও বলছে না। ছেলেকে পেতে কোনওরকম সাহায্য করেনি পুলিশ। এরপরই ক্ষোভে জয়শ্রী জানান, যদি আমার ছেলেকে না খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর যোগী আদিত্যনাথের কাছে যাব। কিভাবে তার পুলিশ কাজ করছে যে একমাত্র ছেলেকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারছে না? তা জানতে চাইব।

পরিবার সূত্রে খবর, নিখোঁজ যুবক কলকাতা থেকে বিটেক পাশ করার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে ইন্ডিয়ান অয়েলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পানিপথে কাজে যোগ দেন। এরপর আচমকাই তাঁকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে উনিশে এপ্রিল তাঁকে ১৫ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার জন্য ট্রেনের টিকিট না পেয়ে পানিপথ থেকে কানপুর বাসে আসেন ইন্দ্রনীল। এরপর কানপুরের গঙ্গাঘাট বাস স্ট্যান্ডে নেমে টোটোতে করে রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারপর থেকেই নিখোঁজ মালদহের এই যুবক। কানপুরের গঙ্গাঘাট থানায় ছেলের নিখোঁজের অভিযোগ করতে গেলে প্রথমে অভিযোগই নিতে চাননি সংলিষ্ট থানার পুলিশ। পরে অসহায় বাবা-মাই ছেলেকে খুঁজে পেতে নিজেরাই সিসিটিভি ফুটেজে জোগাড় করেন। ইতিমধ্যে টোটো চালককে আটক করে গঙ্গাঘাট পুলিশ। এদিকে পুলিশি জেরার মুখে চালক স্বীকার করে তারা মাদক খাইয়ে যুবকের কাছে থাকা ফোন থেকে তার এক বন্ধুর মায়ের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে। এরপরই ইন্দ্রনীলকে অজ্ঞান অবস্থায় স্টেশনের পাশেই ফেলে দেয়।

যুবকের বাবা সাধন ঝা বলেন, কানপুরের পুলিশের কাছে ছেলেকে ফিরে পেতে আমরা বহু আকুতিমিনতি করেছি। তাদের পরিষ্কার কথা নির্বাচন চলছে তাই এসব এখন সম্ভব নয়। তাঁর অভিযোগ, যোগী পুলিশ আমাদের একটু সহায়তা করলে আমরা ছেলেকে ফিরে পেতাম।