এখনও বাকি চার বিধায়কের শপথ। তা নিয়ে জলঘোলার মধ্যেই বরাহনগর ও ভগবানগোলার বিধায়কদের শপথ গ্রহণের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)। সোমবারই দুই বিধায়ককে চিঠি পাঠান তিনি। কেন তাঁর নির্দেশ ‘অমান্য’ করে শপথ হয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে ২ বিধয়ককে বলা হয়েছে, বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিলে বা ভোটাভুটিতে অংশ নিলেন তাঁদের জরিমানা দিতে হবে। শুধু তাই নয়, শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও চিঠিতে হুমকি দিয়েছেন রাজ্যপাল। যদিও রাজ্যের নির্দেশ ‘অমান্য’ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Shobhandev Chatterjee)। পাল্টা আনন্দ বোসকে বিজেপির হাতের পুতুল বলে কটাক্ষ করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী।রাজ্যপাল তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, বিধায়কের শপথগ্রহণের বিষয়ে রাজ্যপালের নির্দেশ পালন না করা, সংসদীয় পদ্ধতি এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। রাজ্যপালকে এড়িয়ে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষের শপথবাক্য পাঠ করানোর অধিকার নেই। এক্ষেত্রে কে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantika Banerjee) এবং রেয়াত হোসেনের কাছে তা কাছে জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী যদি উপাধ্যক্ষ শপথবাক্য পাঠ না করান, তবে তা অসাংবিধানিক। সে ক্ষেত্রে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিলে বা ভোটাভুটিতে অংশ নিলেন তাদের জরিমানা ও শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
কী শাস্তি?
এ ক্ষেত্রে দুই বিধায়কের ৫০০ টাকা জরিমানা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে। রাজ্যপাল বোস (CV Anand Bose) মোট ৩৭টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। স্পিকারকে বিষয়টি জানিয়েছেন সায়ন্তিকা। ওই দুই বিধায়ক সোমবার রাজ্যপালের চিঠি নিয়ে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। অধ্যক্ষের নির্দেশ মতো মঙ্গলবার থেকে নিয়মিত বিধায়ক সভার অধিবেশনে যোগ দেবেন তাঁরা।
উপনির্বাচনে বরাহনগর থেকে জয়ী সায়ন্তিকা এবং ভগবানগোলা কেন্দ্রে জয়ী রেয়াতকে গত ৫ জুলাই শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। যদিও রাজ্যপাল বোস শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দুই বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর পরে বিমান জানিয়েছিলেন, যে হেতু বিধানসভার অধিবেশন চালু আছে, তাই রাজ্যপালের চিঠি মান্যতা পেতে পারে না। রুলস অফ বিজনেসের ২ নম্বর অধ্যায়ের ৫ নম্বর ধারা মেনেই তিনি শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন সায়ন্তিকা-রেয়াতকে।
এই প্রসঙ্গে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, নিয়ম অনুযায়ী, স্পিকার উপস্থিত না থাকলে ডেপুটি স্পিকার কাজ পরিচালনা করেন। এখানে স্পিকার উপস্থিত ছিলেন। সুতরাং ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জানিয়ে দেন নিয়ম অনুযায়ী, তিনি শপথগ্রহণ করাতে পারেন না। একই সঙ্গে তিনি আনন্দ বোসকে তীব্র কটাক্ষ করে পরিষদীয় মন্ত্রী বলেন, বিজেপির কথায় চলছেন মোদি সরকারের আমলের রাজ্যপালরা।
রাজ্যপাল ননইস্যুকে ইস্যু করছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, নিয়ম মেনে, সৌজন্য দেখিয়ে রাজ্যপালকে যা চিঠি দেওয়ার, দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি অনুমোদন না দিয়ে জলঘোলা করছেন। আগেও নিয়ম মেনে ২ বিধায়কের শপথ হয়ে গিয়েছে। আগামিকালও হবে।