চূড়ান্ত অব্যবস্থা, মহাকুম্ভে ভিড়ের চাপেই বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে অমিয়-বিনোদের !

ভুল থেকে প্রশাসন এবং মেলার আয়োজকরা শিক্ষা নেয়নি, সেটা এতগুলি মানুষের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল

কলঙ্ক এড়াতে পারল না প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভমেলা। মৌনী অমাবস্যায় অমৃতস্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জন পুণ্যার্থীর। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। যেমন ভিড় সেখানে ছিল, তাতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। ত্রিবেণি সংগমে মৌনী অমাবস্যায় শাহি স্নানে বিপুল সংখ্যায় তীর্থযাত্রী আসা স্বাভাবিক। যা মেলার আয়োজক এবং প্রশাসনের অজানা ছিল না। তারপরও ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার দায় যোগী সরকার এড়াতে পারে না।এমনই অভিযোগ তৃণমূলের।

মহাকুম্ভে স্নানে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে মালদহের এক স্কুল শিক্ষকের। ভিড়ের চাপে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু, দাবি পরিবারের। মৃত অমিয় সাহার বয়স মাত্র ৩৩। বৈষ্ণবনগরের বীরনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের চড়বাবুপুর এলাকার বাসিন্দা।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্তিকটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমিয়। পরিবার ও আত্মীয়দের দশজনের দলের সঙ্গে মহাকুম্ভে স্নানে গিয়েছিলেন তিনি।এত মানুষের ভিড়ের চাপে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ।তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকালে শিক্ষকের নিথর দেহ ফিরেছে মালদহের(maldaha) বাড়িতে আসতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গ্রামজুড়ে। পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এলাকায় যান বৈষ্ণবনগরের তৃণমূল বিধায়ক চন্দনা সরকার। মহাকুম্ভের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন সহযাত্রীরা। শিক্ষকের মৃত্যুতে যোগী সরকারের ব্যর্থতাকে নিশানা করেন তৃণমূল বিধায়ক।

তার অভিযোগ, দুর্ঘটনার নেপথ্যে প্রশাসন ও মেলার আয়োজকদের চূড়ান্ত গাফিলতি এবং কর্তব্যে অবহেলা স্পষ্ট। কিছুদিন আগে মেলা প্রাঙ্গণে আগুন লেগে গিয়েছিল। সে যাত্রায় পুলিশ, দমকল এবং উদ্ধারকারী দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিল। তারপরও যে সেই ভুল থেকে প্রশাসন এবং মেলার আয়োজকরা শিক্ষা নেয়নি, সেটা এতগুলি মানুষের পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার ভোরে পুণ্যস্নান করেন অমিয়। এরপর যখন তিনি ফিরছিলেন তখন পরিবারের সবাই তার সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু ভিড়ের চাপে অনেকের সঙ্গে কিছু সময় পর তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।অনেক কষ্টে পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজে পান। ততক্ষণে ভিড়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। অসুস্থ অবস্থায় বহুকষ্টে গাড়ির ব্যবস্থা করে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

একইভাবে কুম্ভমেলায়(kumbha mela) পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার এক যুবকের। মৃতের নাম বিনোদ রুইদাস (৪২)। তার বাড়ি জামুড়িয়া থানার কেন্দা বাউড়ি পাড়া এলাকায়।  গত মঙ্গলবার ভোরে পদপিষ্ট হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আত্মীয় এবং আরও কয়েক জনের সঙ্গে কুম্ভে গিয়েছিলেন বিনোদ। তার দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনাস্থলে বিনোদের মোবাইল পড়ে গিয়েছিল। সেটি কুড়িয়ে পান রাজস্থানের এক বাসিন্দা। তিনিই পরিবারের লোকেদের ফোন করেন । পরিবারের লোক পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানতে পারেন, বিনোদের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে কেন্দা ফাঁড়িতে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়।পরিবারকে সমবেদনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক। পরিবারের অভিযোগ, তাদের কোনও কাগজপত্র দেওয়া হয়নি উত্তরপ্রদেশের সরকারের পক্ষ থেকে।