দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। যে ভাষায় রচিত হয়েছে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত, সেই বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করার ঘটনায় প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বাংলার মানুষ। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন টলিউডের একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃত্বও।পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেতা-পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের পর এবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় রূপঙ্কর লেখেন, “সময় থেকে এগিয়ে ছিলাম হয়তো, তাই অনেক কটাক্ষ, উপেক্ষা সহ্য করেছি। আজও বলছি, বাংলা গানের একজন শিল্পী হয়ে, বাংলা ভাষার এই অপমান মেনে নিইনি, নেবও না। সে আপনারা আমাকে যাই ভাবুন না কেন!”
এর সঙ্গে নিজের লেখা কয়েকটি আবেগঘন পঙ্ক্তিও ভাগ করে নেন রূপঙ্কর—
কত অভিমান জমে ছিলো মাগো
বুকের ক্ষত-এ প্রলেপের মত,
মাতৃভাষায় প্রথম ডাকা ‘মা’
জন্মভূমির দিব্বি তোমায় ছাড়বো না।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। দলটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি একটি পরিকল্পিত অপমান। সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত একটি ভারতীয় ভাষার পরিচয় কেড়ে নেওয়ার এবং লক্ষ লক্ষ বাংলাভাষী ভারতীয়কে তাঁদের নিজের দেশেই বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরার এক সরকারি প্রয়াস। তৃণমূল আরও জানায়, “বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ বাংলায় কথা বলেন। বাংলা ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও সমৃদ্ধ ভাষা। এটি দেশের ২২টি সংবিধান স্বীকৃত ভাষার মধ্যে একটি। এখনও পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা বা দুঃখপ্রকাশ করা হয়নি। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ভাষা নিয়ে এমন ‘বেআপত্তিক মন্তব্য’ যে কোনও মূল্যে মেনে নেওয়া হবে না—সে বার্তাই এখন বাংলার সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক জগৎ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন – বিদ্যাসাগরের মূর্তি উপহার পেয়ে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী, রাস্তাতেই স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে কথোপকথন
_
_
_
_
_
_
_
_
_
_