বাংলা বিরোধী নীতি ধরে রাখতে বাংলাকে ভাতে মারার পরিকল্পনা নিয়েছিল কেন্দ্রের স্বৈরাচারী বিজেপি সরকার। তার প্রথম ধাপ হিসাবে বাংলায় একশো দিনের বকেয়া টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়ে বাংলায় এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তিন বছর ধরে। কেন্দ্রের এই স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় বাংলার প্রশাসন। হাই কোর্টে দ্রুত প্রকল্প চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল। পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে বাংলার টাকা আটকাতে যায় কেন্দ্র। সোমবার সেই মামলায় মুখ পুড়ল কেন্দ্রের। হাই কোর্টের প্রকল্প চালু করার নির্দেশই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।

একদিকে জেলায় জেলায় সাধারণ মানুষ কেন্দ্রের একশো দিনের প্রকল্পে (MGNREGS) কাজ করেও টাকা পাননি। অন্যদিকে তিন বছর ধরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকাই বরাদ্দ না করায় সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন কাজের সুযোগ থেকে। প্রতিকারে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বাংলার মানুষের স্বার্থে কর্মশ্রী (Karmasree) প্রকল্প চালু করেছেন। তবে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হওয়া থামায়নি বাংলার প্রশাসন বা শাসক দল। কলকাতা হাইকোর্ট এই ইস্যুতে ১৮ জুন রায় দিয়েছিল, ১ অগাস্ট থেকে বাংলায় ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ চালু করতে হবে কেন্দ্রকে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে বেমালুম অগ্রাহ্য করে যায় কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সরকার।

হাইকোর্টের রায়ে জানানো হয়েছিল, যদি মাত্র চারটি জেলা থেকে প্রকল্পে কোনও অভিযোগ থাকে তবে সেখানে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা যেতে পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষের স্বার্থে কেন্দ্র সরকারের যে প্রকল্প, তা থেকে এত বিপুল পরিমাণ মানুষকে বঞ্চিত করা যায় না। ফলে দ্রুত চালু করতে হবে বাংলায় ১০০ দিনের কাজ। ১ অগাস্ট থেকে কাজ চালু করার নির্দেশ দিলেও কেন্দ্র সরকার তাতে পাত্তাই দেয়নি। উপরন্তু অগাস্টের মাঝামাঝি কেন্দ্র হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সোমবার সেই মামলায় মুখ পুড়ল কেন্দ্রেরই।

আরও পড়ুন: দিল্লিতে উধাও নারী নিরাপত্তা: কলেজ ছাত্রীর উপর অ্যাসিড হামলা!

দেশের শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টেরই রায় বহাল রাখল বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ। এদিন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কার্যত রায় শোনান বিচারপতি। অর্থাৎ দ্রুত ১০০ দিনের কাজ (MGNREGS) চালু করার নির্দেশই বহাল থাকল। এর ফলে এই প্রকল্পে বাংলার বিভিন্ন রাজ্যে বকেয়া নিয়ে যেসব মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে, তারও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ফের একবার প্রমাণিত হল বাংলার প্রতি প্রতিহিংসায় বঞ্চনা করে কেন্দ্রের সরকার, দাবি বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেন, বাংলাকে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ধর্না দিয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি অভিযান করেছেন। কলকাতা হাই কোর্টে বলেছিল দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টও আজকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের দাবিতে সম্পূর্ণ মান্যতা দিয়েছে। আবার প্রমাণ হল এই বিজেপি নিয়মের বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা, ঘৃণা, অপমান করে। পাশাপাশি তৃণমূল নেতা সুদীপ রাহা দাবি করেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলার প্রাপ্য অধিকারের টাকা তো দিচ্ছেই না, বরং আদালত টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, এ থেকে প্রমাণিত হয় বিজেপি একটা বাংলা বিরোধী দল! বিজেপির জমিদাররা আজ কোর্টে হারল, আগামীদিন এরা বাংলার ভোটে হারবে। এদের ঔদ্ধত্য, অহংকারই এদের পতনের কারণ হবে।

–

–

–
–


