মাত্র ১৪ বছর বয়সে অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি তাঁর বাবা-মাকে হারিয়েছেন। এবার এক সাক্ষাৎকারে আরশাদ মায়ের স্মৃতি রোমন্থন করলেন এবং জানালেন অতীতের কথা। আরশাদ জানিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে শৈশবের খুব বেশি স্মৃতি তাঁর নেই। তিনি তাঁর ছোটবেলার বেশিরভাগ সময়টা বোর্ডিং স্কুলে কাটিয়েছেন। তিনি বলেন, পরিবারের চেয়ে তিনি স্কুলকে বেশি মিস করেন। ৮ বছর বয়সে বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

তবে সবকিছুর মাঝে তিনি জানান এখনও মায়ের কথা মনে পড়ে তাঁর। মৃত্যুর আগে শেষ সময়ের স্মৃতিটা অত্যন্ত ভয়াবহ ছিল তাঁর। বাবার মৃত্যুর পরে তাঁর মায়েরও কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। অভিনেতার মা গৃহবধূ ছিলেন এবং খুব ভালো রান্না করতেন। ডাক্তাররা বলেছিলেন, তাঁকে বেশি জল না দিতে। কিন্তু তিনি বারবার জল চাইতেন। মৃত্যুর আগের রাতে তিনি অভিনেতাকে জলের জন্য ডেকেছিলেন। কিন্তু পাননি। সেই রাতেই তিনি মারা যান।

এই বিষয়টা আরশাদের মনে দাগ কাটে। অদ্ভুত এক দ্বন্দ্ব! তিনি মনে করেন তখন যদি তিনি মাকে জল দিতেন তা হলেও তিনি মারা যেতেন। সে ক্ষেত্রে অন্তত সারাজীবন হয়ত এই অপরাধবোধ থাকত না যে শেষ জলটুকুও তিনি মাকে দেন নি। তবে সেই ক্ষেত্রে এটাও মনে হত জল দিয়েছিলেন বলেই হয়তো মা মারা গেলেন। সময়ের সাথে আরশাদ এখন আর এই ব্যাপারে নিজেকে দোষ দেন না। তবে তিনি মনে করেন যে তাঁর মাকে জল দেওয়া উচিত ছিল। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘এখন আমার মনে হয় আমার মাকে জল দেওয়াটা উচিত ছিল। আমি তখন অনেক ছোট। ডাক্তারের কথা শুনব বলেই ভেবেছিলাম। এখন ভাবি কেন ঠিক করে সিদ্ধান্ত নিতে পারি নি।’

প্রসঙ্গত, তিনি জানান তাঁর বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে তিনি খুব একটা কাঁদেননি। নিজের মনের সাথে লড়াই করেই একজন সফল পুরুষের মতো আচরণ করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি, কয়েক সপ্তাহ পরে যখন তিনি বুঝতে পারলেন বাবা-মা আর ফিরবে না কোনদিন তখন তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি আজও মনে করেন জীবনের প্রাথমিক শিক্ষা যাঁদের হাত ধরে হয় সেই বাবা মা মৃত্যুর পর তাঁকে প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন – নয়া উদ্যোগ রাজ্যের, কৃষকদের আয় বাড়াতে তৈরি হচ্ছে ১০টি ফসলভিত্তিক হাব

_

_

_

_
_
_


