পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের বাসিন্দা। সোনার ব্যবসা করতেন নিউটাউনের দত্তাবাদে। দেহ পাওয়া গেল যাত্রাগাছির কাছে। খুনে নাম জড়ালো জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজগঞ্জের বিডিও-র (BDO)। একের পর এক রহস্যের জাল ছাড়ানোর চেষ্টা বিধাননগর থানার (Bidhannagar police station)। গ্রেফতার করা হয় দুজনকে। গ্রেফতার দুজনের বয়ান থেকে স্পষ্ট হয়েছে ঘটনায় বিডিও-র যোগ। গোটা ঘটনার পর্দাফাঁস করতে এবার স্বর্ণব্যবসায়ীর খুনের তদন্তভার বিধাননগর থানার গোয়েন্দা বিভাগের (detective deparrtment) হাতে তুলে দেওয়া হল।

রাজগঞ্জের (Rajganj) বিডিও প্রশান্ত বর্মনের বাড়ি থেকে সোনা চুরির ঘটনায় রাগে চোর ও চোরাই সোনা কেনায় অভিযুক্ত স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যাকে নিজের বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন, এমনটাই অভিযোগ। যে ব্যক্তি চুরি (theft) করেছিলেন, তিনি দাবি করেছেন, দুজনকেই মারধর করা হয়। বেলা ১২টা থেকে প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মারধর করা হয়। ততক্ষণে চুরির কথা ও স্বপনকে চোরাই সোনা বিক্রির কথা জানান দুজনই। এরপরই তাঁদের মারধর করা হয় বিডিও-র বাড়িতে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ধৃত চোরকে ছেড়ে দেওয়া হলেও ছাড়া হয়নি স্বপন কামিল্যাকে।

ইতিমধ্যেই বিডিও প্রশান্ত বর্মণ ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার তুফান থাপা ও তাঁর গাড়ির চালক রাজু ঢালিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার দিন প্রশান্ত বর্মণের উপস্থিতিতেই মারধর করা হয় স্বপন কামিল্যাকে। চড় থাপ্পড়ের পাশাপাশি বেল্ট, লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়, এমনটাই জেরায় জানিয়েছে ধৃতরা। সেই সময়ে ছয়জন সেখানে উপস্থিত ছিল। তার মধ্য়ে গাড়ির চালক রাজু ঢালি ছাড়া বাকি সকলেই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা, উঠে আসে জিজ্ঞাসাবাদে।

পুলিশের জেরায় স্বপন কামিল্যার মৃত্যুর বিষয়ে পুলিশের তদন্তে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি একাংশের তদন্তকারীদের। ধৃতরা দাবি করেছে ঘাড়ের পিছনে আঘাত লাগায় মৃত্যু হয় স্বপন কামিল্যার। এরপর বিডিও-র নীলবাতি গাড়িতে সেই মৃতদেহ যাত্রাগাছি এলাকায় ফেলে দিয়ে আসা হয়। স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজের (CCTV footage) সঙ্গে সেই বয়ান মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। আপাতত জেরা থেকে পাওয়া তথ্য ও অন্যান্য তথ্য গোয়েন্দা বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: নিউটাউনে ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার: স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে অভিযুক্ত বিডিও!

যদিও এতকিছুর পরেও সব অভিযোগ অস্বীকার করছেন বিডিও প্রশান্ত বর্মণ। তাঁর বিরুদ্ধে স্বপন কামিল্যার দাঁতনের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া যে অভিযোগ তা-ও অস্বীকার করেছেন তিনি। যদিও পুলিশের তদন্তে সেই বয়ানের অন্য রকম তথ্য সামনে এসেছে। তিনি কলকাতা ছেড়ে রাজগঞ্জে গিয়ে ফেল বিডিও-র আসনে বসে কাজও শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনাটি তাঁকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন বিডিও প্রশান্ত।

–

–

–

–

