জয়িতা মৌলিক
ভারতের ফুটবলের মক্কায় এসেছিলেন বিশ্ব ফুটবলের (Football) রাজপুত্র। তাঁকে দেখতে ফুটবল প্রেমী বাঙালি উপচে পড়েছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে (Yuba Bharati Stadium)। কিন্তু আয়োজকদের চূড়ান্ত অপদার্থতা আর অব্যবস্থায় শেষ পর্যন্ত চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায় স্টেডিয়াম জুড়ে। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ-কিছুই বাদ যায়নি। তবে এর মধ্যেও উঠেছে “জয় শ্রীরাম“ ধ্বনি। হাতে গেরুয়া পতাকা নিয়ে একেবারে মাঠের মাঝখানে উন্মত্ত নৃত্য করেছেন একদল যুবক। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি উস্কানি দিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে!
ঠিক সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্টেডিয়ামে ঢোকেন লিওনেল মেসির (Lionel Messi) গাড়ি। তার কিছুক্ষণ পরেই গাড়ি থেকে নেমে মাঠে ঢোকেন তিনি। মেসির সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি’পল। ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখে উচ্ছ্বসিত দেখায় মেসিকে। কিন্তু ভিড়ের দঙ্গলে তাঁকে এক ঝলকে দেখতে পাননি দাম দিয়ে টিকিট কাটা দর্শকরা। সারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকী নেপাল থেকেও ফুটবলের রাজপুত্রকে এক ঝলক দেখতে কলকাতার যুবভারতীর ক্রীড়াঙ্গনে (Yuba Bharati Stadium) উপস্থিত হয়েছিলেন মেসি ভক্তরা। কিন্তু তাদের হতাশ করে মাত্র উনিশ মিনিট মাঠে থেকেই বেরিয়ে যান মেসি। তাঁকে নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ বা পেনাল্টি শট দেওয়া কিছুই করানো হয়নি। এমনকী ঠিক করে তাঁকে দেখতেও পাননি অধিকাংশ দর্শক। মেসি মাঠ ছাড়তেই ক্ষোভ উগরে প্রথমে আয়োজক ও ক্রীড়ামন্ত্রীকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে জলের বোতল, জুতো। তারপরে শুরু হয় চেয়ার-হোডিং ভাঙা। ভেঙে ফেলা হয় ভিভিআইপিদের (VVIP) জন্য নির্ধারিত কেনোপি। আগুন পর্যন্ত ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় গোলপোস্টের জাল, উপড়ে ফেলা হয় তিনকাটি।
আরও খবর: অব্যবস্থা, বিজেপির উস্কানি! যুবভারতীর ঘটনার তীব্র নিন্দা তৃণমূলের, আয়োজককে তোপ কুণালের
প্রশ্ন ওঠে, এতো প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও কেন এক ঝলক দেখানো হল না মেসিকে? মেসিকে ঘিরে ছিলেন মন্ত্রী-VVIP-রাই। দর্শকরা ঠিকমতো দেখতেই পাননি ফুটবলের রাজপুত্রকে। প্রশ্ন উঠছে, কী করছিলেন উদ্যোক্তারা? ভিড় জেনেও কেন প্রস্তুতি করা হয়নি? পুলিশের সঙ্গে বারবার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন দর্শকরা। তবে, ধৈর্য ধরেই পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করে প্রশাসন।
এর মধ্যেই দেখা যায়, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের একেবারে মাঠের মাঝে হাতে গেরুয়া পতাকা হাতে একদল তাণ্ডব চালাচ্ছেন। মুখে মুখে জয় শ্রীরাম স্লোগান। গ্যালারি থেকে ফেন্সিং টপকে মাঠে ঢুকে তাণ্ডব চালাতে দেখা যায় তাঁদের। এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি যুবভারতীতে ভাঙচুর চালানো ও অগ্নি সংযোগ করা হয়? মেসিকে দেখতে না পেয়ে দর্শকের ক্ষোভ যুক্তিসঙ্গত মানছেন অনেকেই। কিন্তু ফুটবল প্রেমী মানুষ কি কখন মাঠের ক্ষতি, গোলপোস্ট ভাঙচুর করতে পারেন? আর সেখানেই অভিযোগ, এই ভাঙচুরের পিছনে গেরুয়া শিবিরের উস্কানি ছিল।
–
–
–
–
–
–
