ট্রফির উল্লাসে উপেক্ষিত করোনা বিধি, আশঙ্কার মেঘ দেখছে শহর

কথায় আছে, মানুষ যদি নিজে থেকে সচেতন না হয়, তাহলে তাঁকে কেউ সাহায্য করতে পারবে না। হাজার নিয়ম, বিধি লাগু হলেও, কোনও লাভ হবে না। আর এই কথাটি যে কতটা সত্যি তা আজ প্রমাণ হল কলকাতার রাজপথে। আবেগের বহিঃপ্রকাশ যদি এমন হয়, তাহলে দুর্গাপুজোয় কী হবে, তা ভেবেই চিন্তিত অনেকেই।

আরও পড়ুন : আজ শহরের রং সবুজ-মেরুন! আই লিগ ট্রফি জয়ের আবেগে ভাসছেন মোহনবাগান সমর্থকরা

আরও পড়ুন : সংক্রমণ বাড়ছে, পুজো নিয়ে মুখ্যসচিবের জরুরি বৈঠক সোমবার, কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত

উল্লেখ্য, এদিন বহু প্রতিক্ষিত আইলিগ ট্রফি হাতে পেয়েছে মোহনবাগান ক্লাব। এদিন বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারা হোটেলে মোহনবাগান কর্তাদের হাতে ভারত সেরার ট্রফি তুলে দেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন আই লিগের সিইও সুনন্দ ধর। এই ট্রফি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আগেই সম্পন্ন হতো, কিন্তু করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়।

এদিন ট্রফি পাওয়ার পরই শহর পরিক্রমায় বেরোয় মোহন জনতা। হায়াত থেকে বাইপাস, উল্টোডাঙা, খান্না, হাতিবাগান থেকে উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় পরিক্রমা করা হয়। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই হই-হুল্লোড় করতে দেখা যায় কয়েক হাজার সমর্থককে। কিন্তু চিন্তার বিষয়, মিছিলে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি ছিল না। এমনকী, অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না, যা ছবিতে স্পষ্ট। বিধি কার্যকর করতে প্রশাসনিক তৎপরতাও চোখে পড়েনি।

করোনার সংক্রমণ যেভাবে দিনদিন বাড়ছে, তা নিয়ে চিন্তিত সকলেই। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে, করোনা নিয়ে অনেক আগে থেকেই যাবতীয় সতর্কতা নিয়েছিল কেরালা। কিন্তু ওনামের পর সেই কেরালার কী অবস্থা হয়েছিল, তা সকলেরই জানা। এই আশঙ্কায় আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ। চিঠিতে তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন, যাতে কোনও উপায়ে পুজোর ভিড়ে রাশ টানা যায়। কারণ, ভিড় বাড়লেই বাড়বে সংক্রমণ।

আরও পড়ুন : দুর্গাপূজা সমারোহের বিপদ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালো ডাক্তারদের জয়েন্ট প্লাটফর্ম

আরও পড়ুন : পুজো মণ্ডপে ভিড় নিয়ন্ত্রণে নোডাল অফিসার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত লালবাজারের

এই পরিস্থিতিতে এবছর সদর্থক সিদ্ধান্ত নিয়ে কলকাতা ও জেলার কয়েকটা ক্লাবও। প্যান্ডেলে ভিড় যাতে না হয়, দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ বন্ধ রাখা হয়েছে। তালিকায় ম্যাডক্স স্কোয়ার, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, বেহালা দেবদারু ফটক সহ আরও কয়েকটা ক্লাব রয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর করতে নবান্ন কী ব্যবস্থা নিয়েছে সে ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট। লালবাজারের তরফেও প্রতিটি প্যান্ডেলে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন : এবারের পুজো সম্পূর্ণ দর্শক বিহীন করার বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের

আরও পড়ুন : করোনা আবহে রাজ্যে দুর্গোৎসব বন্ধ রাখার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা

এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আজ মোহনবাগান ক্লাব সমর্থকদের উল্লাসের যে ছবিটা সামনে এল, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ছবি থেকেই প্রশ্ন উঠে গেল, আইলিগ ট্রফি নিয়ে যদি এই হাল হয়, পুজোয় কী হবে?

Previous articleসুস্থ হয়ে বাড়ির পথে “করোনা যোদ্ধা” বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা
Next articleঐতিহাসিক জোড়া সুপার ওভারে মুম্বইকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসল পঞ্জাব