বাংলা সিটিজেন্স ফোরামের সভা জমিয়ে দিলেন রুদ্রনীল

লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে জেরবার সাধারণ মানুষ। যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েই চলেছে, তাতে কপালে ভাঁজ মধ্যবিত্তের। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে রবিবার উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটে সভা করল ‘বাংলা সিটিজেন্স ফোরাম’।
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা, চিন্তাবিদ রুদ্রনীল ঘোষ । তিনি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। অভিনেতা বলেন, আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তাতে যেভাবে মাস্ক, স্যানিটাইজারকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাইরে রাখা হয়েছে তাতে মনে হতেই পারে এই মারণ ভাইরাস ছড়ানোর জন্য আমরাই দায়ী । তাঁর স্পষ্ট কথা, যার পেট ভরে ভাত খাওয়ার ক্ষমতাই নেই সে মাস্ক, স্যানিটাইজার কীভাবে কিনবে? কীভাবে এই ভাইরাস থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে। বরং তাঁর প্রশ্ন, রাষ্ট্রের কী কোনও দায় নেই। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, সরকার যায় আসে কিন্তু কেউই মানুষের বেঁচে থাকার সামান্য খাবার মুখে তুলে দেওয়ার কথা ভাবেনা । কারণ, তাদের কাজে আর কথায় বিস্তর ফারাক। যারা রোদে -জলে পুড়ে ফসল ফলান, তারা না খেতে পেয়ে মারা যান। অথচ মুনাফা লোটে মজুতদাররা। কবে পরিবর্তন হবে এই পরিস্থিতির? অভিনেতার সাফ কথা, এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ নিদারুণ অর্থকষ্টে ভুগছে । অথচ যাদের উপর বিশ্বাস করে, যাদের অভিভাবক মনে করে মানুষ উচ্চ আসনে স্থান দিয়েছিল, তারা মুখে পরিস্থিতির কথা শুনে বুঝলেন কিন্তু সেই সমস্যা সমাধানে কোনও পথ দেখাতে পারছেন না। যার ফলে এই পরিস্থিতিতে নিদারুণ অর্থকষ্টে ভুগছেন সাধারন মানুষ । তার বক্তব্য, এর ফলে মানুষের মধ্যে সহনশীলতা কমছে, যা আমাদের দেশে মোটেই কাম্য নয় ।
অভিনেতা হিসেবে রুদ্র থেকে রুদ্রনীল হওয়ার নেপথ্যে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও সাধারণ মানুষের সাহচর্য তিনি পেয়েছেন । সে কথা বলতেও দ্বিধা করেননি এই অভিনেতা । তিনি বলেন, আমাদের যারা অভিভাবক সেই রাজ্য সরকার লকডাউনের মধ্যে ‘সুফাল বাংলা’ স্টল দিয়েছেন। প্রচুর মানুষ উপকৃত হয়েছেন। কম দামে তাদের কাছে সবজি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে রাজ্য সরকার । তেমনি কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের পাশে থাকার কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবিক অন্য কথা বলছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার একটু ভাবুন যাতে এই পরিস্থিতিতেও সাধারণ মানুষ বেঁচে থাকার, লড়াইয়ের রসদ হাতে পায়।
সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলা সিটিজেন্স ফোরাম’ যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে এই দুঃসময়ে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে তাকে সাধুবাদ জানিয়ে অভিনেতা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কোনও একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তবেই দেশের মানুষ বাঁচবে। শুধুমাত্র নিজেদের সচেতন হলেই চলবে না , সাধারণ মানুষকে বাঁচার লড়াই করার রসদটা যদি কেন্দ্রীয় সরকার দেয় তবে ফের আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব।
এদিন সভামঞ্চের পাশে ” সুফল বাংলা” প্রকল্পের স্টল- গাড়ি রাখা হয়। এখান থেকে সস্তায় আলু কেনেন বিপুল মানুষ। 25 টাকা কিলো আলু বিক্রি হয়।
বিভিন্ন ওয়ার্ডের ছাত্রযুব ও নাগরিকদের পাশাপাশি এদিন উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার, পুরপিতা জীবন সাহা, সজল ঘোষ, প্রবন্ধ রায়, তমোঘ্ন ঘোষ, প্রমুখ বিশিষ্টজনেরা।
রুদ্রনীল যেভাবে এদিন তার বক্তব্য রাখলেন , তা রীতিমতো তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করলেন উপস্থিত সকলেই ।

Previous article‘দূর হোক বিভাজন’, ঐক্যের লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ বাইডেন-হ্যারিসকে চিঠি সোনিয়ার
Next articleপরাজিত ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়লেই ডিভোর্সের পথে হাঁটবেন মেলানিয়া!