Saturday, November 15, 2025

শীতলকুচি কাণ্ড: কে অর্ডার দিলো? গুলি চালানো পদ্ধতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

Date:

Share post:

হাইভোল্টেজ নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) মধ্যেই কোচবিহারের শীতলকুচি (Shitalkuchi) কাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। চতুর্থ দফা ভোট গ্রহণের সকালেই শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) গুলির বলি চারটি তরতাজা প্রাণ। এই ঘটনার দায় কার? একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ শাসক-বিরোধীর।

Advt

কী বলছেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা থেকে শুরু করে আইনজীবীরা?

ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর এভাবে গুলি চালানোর পিছনে কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তা থেকে আইন বিশেষজ্ঞরা। ঠিক কী পরিস্থিতিতে গুলি চালানো হয়েছিল, কে বা কারা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল? ইত্যাদি অনেক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে।

প্রাক্তন পুলিশ কর্তা চয়ন মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, গুলি চালানোর পরিস্থিতি হলে সেটা পায়ে চালানো যেতে পারতো। তাতে মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো যেত। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানের দিন ব্রাবোন রোডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন তদানীন্তন ডিসি ট্রাফিক চয়ন মুখোপাধ্যায়। শীতলকুচির প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, সেদিন কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের সামলাতে হিমশিম খেতে হলেও একটি বারের জন্য গুলি চালানোর কথা ভাবেননি তিনি।কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেছিলেন।

তাঁর কথায়, এইরকম পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় সবচেয়ে কম শক্তি প্রয়োগ করে বেশি সাফল্য চায় পুলিশ। সেই কারণেই তো পুলিশ বা কেন্দ্রীয় বাহিনীতে মাসের পর মাসে ট্রেনিং চলে। রায়ট কন্ট্রোল ট্রেনিংয়ে সবকিছু শেখানো হয়। পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তা হাতেকলমে শেখানো হয়।

চয়নবাবু আরও জানান, অনেক মানুষের একত্রিত গোলমাল থামাতে প্রথমে লাঠিচার্জ করতে হবে। তাতেও উত্তেজিত জনতা ছত্রভঙ্গ না হলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়তে হবে। কিন্তু উত্তেজনা হাতের বাইরে চলে গেলে সেক্ষেত্রে গুলি চালানোর প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হয় পুলিস রেগুলেশন অব বেঙ্গল (পিআরবি)-এর নির্দেশাবলীকে। সেখানে স্পষ্ট বলা রয়েছে, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, গুলি চালাতে হবে শূন্যে বা হাঁটুর
নীচে। কখনই তা মাথা বা বুক লক্ষ্য করে নয়। শীতলকুচিতে এই কপি বুক ফলো করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা।

বিশিষ্ট আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ প্রশ্ন তুলে বলেছেন, গুলি চালানোর নির্দেশ কে দিল? জেলা শাসক যদি সেই নির্দেশ দিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর লিখিত অর্ডার কোথায়? এক্ষেত্রে মৌখিক নির্দেশে কিছু হয় না। তাই প্রথমেই চিহ্নিত করা দরকার গুলি চালানোর অর্ডার কার থেকে পেল কেন্দ্রীয় বাহিনী। অর্ডার না থাকলে তারা গুলি চালাতে পারে না। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি, তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘিরে ধরা হয়। তাহলে বাহিনীর কেউ আহত হলেন না কেন? পুলিশের কেউ আহত হয়েছে বলে শোনা যায়নি। আগ্নেয়াস্ত্র বার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, সেই বেআইনি আর্মস বাজেয়াপ্ত করে স্থানীয় থানায় জমা দিয়ে তারা লিখিত অভিযোগ করেছে কি? ধারালো অস্ত্রসস্ত্রই বা গেল কোথায়?

 

spot_img

Related articles

আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার জন্মের সার্ধশতবর্ষপূর্তিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা মুখ্যমন্ত্রীর

ইতিহাসের পাতায় মাতৃভূমির বীর পুত্র এবং কন্যাদের জন্ম প্রতিনিয়ত ভারতের চেতনার প্রকাশ ঘটিয়েছে। ভগবান বিরসা মুন্ডা নক্ষত্রমণ্ডলের অন্যতম...

দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের কাছে সিগন্যালিংয়ের কাজ, ব্লু লাইনে মেট্রো চলছে বরাহনগর পর্যন্ত

সকাল সকাল ব্যাহত মেট্রো পরিষেবা (Metro Service Interrupted)। মেট্রো চলছে শহিদ ক্ষুদিরাম থেকে বরাহনগর পর্যন্ত। ব্লু লাইনে দক্ষিণেশ্বর...

শীতের অনুভূতিতে বাধা, কার্তিকের শেষ লগ্নে চড়বে পারদ জানালো হাওয়া অফিস

ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে চলতে থাকার শীতের আমেজে এবার সাময়িক বিরাম। আলিপুর হাওয়া অফিস (Alipore Weather Department)...

লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণ কাণ্ডে উত্তর দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার মেডিক্যাল ছাত্র!

দিল্লির লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের (Delhi Blast near Red fort) ঘটনায় এবার উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) সূর্যাপুর বাজার...