Tuesday, December 2, 2025

পাহাড়ে ভোট কাটাকুটিতে বিজেপি ২, তামাংদের দখলে ১, কোণঠাসা গুরুং, কিশোর সাহার কলম

Date:

Share post:

কিশোর সাহা

দার্জিলিং পাহাড়ের তিনটি আসনে বিজেপিকে হারাতে নিজেদের মধ্যে জেদাজেদি করে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাং, দুজনেই আলাদা করে প্রার্থী দিয়েছিলেন। দুজনের ভোট ভাগাভাগির সুবাদে দার্জিলিং পাহাড়ে ২টি আসনে জিতে গেল বিজেপি। তৃতীয় আসনটিতে খাতা খুলল পাহাড়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিনয় তামাং গোষ্ঠী। ফলে, পাহাড়ে যেমন বিজেপির শক্তি বাড়ল। তেমনই বিমল গুরুংয়ের গোষ্ঠীর চেয়েও যে তাঁদের জোর বেশি সেটা প্রমাণ করে দিলেন বিনয় তামাং।

দার্জিলিং পাহাড়ে মোট ৩টি আসন। দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পং। দার্জিলিং আসনটি বিজেপির দখলে ছিল। তা এবার ফের বিজেপির সেই বিধায়ক নীরজ জিম্বার দখলেই গিয়েছে। সেখানে বিমল ও বিনয় গোষ্ঠী আলাদা করে যা ভোট পেয়েছে তা যোগ করলে বিজেপির চেয়েও বেশি। ভোট কাটাকুটি না হলে বিজেপির জয় মুশকিল ছিল।

কার্শিয়াঙেও বিজেপি প্রার্থী বি পি বাজগাও জয়ী হয়েছেন। তিনি প্রায় ৫০ হাজার ভোট পেয়েছেন। বিনয় ও বিমল গোষ্ঠীর দুই প্রার্থীর সম্মিলিত ভোট হল ৫৪ হাজারের বেশি। এখানেও কাটাকুটির খেলায় বিজেপি আসনটি দখল করেছে বলাই যেতে পারে। কালিম্পং আসনটি বিনয় গোষ্ঠীর প্রার্থী রুদেন সাদা লেপচা জিতেছেন। তিনি প্রায় ৫০ হাজার ভোট পেয়েছেন। বিজেপির শুভ প্রধান ৫০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছলেও অল্প ব্যবধানে হেরেছেন। সেখানে বিমল গোষ্ঠীর প্রার্থী ২৫ হাজার ভোট পেয়েছেন।

আরও পড়ুন-দিদি ও দিদি’ অপমানের কড়া জবাব, ‘দিদি জিও দিদি’: মমতাকে অভিনন্দন অখিলেশ-তেজস্বীর

একটা সময়ে দার্জিলিং পাহাড়ে সুবাস ঘিসিং যাঁকে সমর্থন করতেন তিনিই জিততেন। পরে বিমল গুরুং যাঁকে সমর্থন দিতেন তিনিই জয়ী হতেন। এবার বিমল গুরুং অন্তরাল থেকে আত্মপ্রকাশ করে বিজেপিকে হারানোর লক্ষ্যে কোমর বেঁধে নামেন। পাহাড়ে বিজেপি বিরোধী হিসেবে বিনয় তামাংরাও তৃণমূলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন। এবার বিধানসভা ভোটের আগে দুপক্ষকে একজোট করার চেষ্টা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। বিমল-বিনয় আলাদা করে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকেন। সে সময়ে বিমল গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয় তৃমমূল। তা নিয়ে বিনয় তামাংরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তৃণমূলের বিরোধিতা করেননি। পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের কর্তৃত্ব যে আগের মতো নেই সেটা ভোটের ফলেই ফের স্পষ্ট হবে বলে জানিয়ে দেন বিনয় তামাংরা।

রবিবার ভোটের ফল বুঝিয়ে দিল পাহাড়ে বিমল গুরুং আর একচ্ছত্র অধিপতি নন। সেখানে বিনয় তামাং-অনীত থাপাদেরও সাংগঠনিক ক্ষমতা কম নয়, বরং বিমলের চেয়ে বেশি সংহত। এবং বিমল-বিনয়রা একজোট হলে পাহাড়ে যে বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারবে না সেটাও ভোটের হিসেব বলছে।
ভোটের পরে তৃণমূলের সঙ্গে নিশ্চয়ই আলোচনায় বসবেন বিমল-বিনয়রা। সেখানে নতুন সম্পর্কের সূচনা হয় কি না সেটাই দেখার বিষয়।

Advt

spot_img

Related articles

বুধেই ভাগ্য নির্ধারণ! বাংলাদেশে বসে ফেরার অপেক্ষায় অন্তঃসত্ত্বা সোনালি

বাংলাদেশে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ফলে জেলমুক্তি ঘটেছে। কিন্তু নিজের দেশে, নিজের ঘরে ফেরা কবে? আজও জানেন না বীরভূমের...

প্রশাসনিক গতি ফেরাতে যাদবপুরে দুই মাসের অস্থায়ী রেজিস্ট্রার সেলিম বক্স মন্ডল

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্ম দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রার শূন্য থাকার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছিল। কর্মসমিতির বৈঠক হলেও রেজিস্ট্রার অনুপস্থিত থাকায়...

শিল্প সম্মেলন থেকে কনক্লেভ: শিল্পের উন্নয়ন-খতিয়ানের সঙ্গে সূচি প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

কেন্দ্রের নির্দেশে নির্বাচন কমিশনের চাপিয়ে দেওয়া এসআইআর-এর কারণে নাজেহাল প্রশাসনিক আধিকারিকরা। শহর থেকে প্রত্যন্ত এলাকায় ভোটার তালিকা তৈরির...

বিবাদিবাগে সরে যাচ্ছে সিইও দফতর, ভোটের আগেই নজরদারিতে কড়াকড়ি

চলতি মাসের মধ্যেই নতুন দফতরে সরে যাচ্ছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) অফিস। কমিশন সূত্রে খবর, বিবাদিবাগে শিপিং...