Saturday, August 23, 2025

‘একতরফা, অতিরঞ্জিত, মনগড়া’- কমিশনের রিপোর্টকে উড়িয়ে দিল রাজ্য

Date:

Share post:

হিংসা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের কড়া জবাব দিলো রাজ্য সরকার। কমিশন এবং কমিশন নিযুক্ত ৭ সদস্যের কমিটির কার্যকলাপকে সরাসরি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে হাইকোর্টে পেশ করা রাজ্য সরকারের হলফনামায়৷

গত ১৫ জুলাই হাইকোর্টে জমা পড়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট। আদালত সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। আছে শাসকের আইন। পাশাপাশি, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশও করে কমিশন। এর উত্তরে রাজ্য তথ্য পেশ করে বলেছে,

◾ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট একতরফা, অতিরঞ্জিত, মনগড়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি।

◾কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার কাছে এই রিপোর্ট কাম্য নয়। সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্ট।

◾এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশনের ওই বিশেষ দলটি। এই দল পক্ষপাতদুষ্ট৷ বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের স্বার্থরক্ষা করতেই দলটিকে এরাজ্যে পাঠানো হয়েছে৷

◾রাজ্যে আসা কমিশনের বিশেষ দলটির সদস্যদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওই বিশেষ দলের সদস্য মনোনীত তাঁদেরই করা হয়েছে, যাদের সঙ্গে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। রাজ্য সম্পর্কে নেতিবাচক রিপোর্ট দেওয়ার জন্যই এই সব সদস্যদের নিয়োগ করা হয়েছে। বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে মিথ্যা তথ্য সংগ্রহের জন্যই দল গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়।
◾মোট ৭,৯৯, ৩৮২ টাকা খরচ হয়েছে কমিটির সদস্যদের জন্য। কমিটির সদস্যদের সঙ্গে থাকা লোকজনের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও
রাজ্যকে করতে হয়েছে৷ তাঁদের খরচের বিল মিটিয়েছে। হোটেল, গেস্ট হাউসের বিল’ও রাজ্যই দিয়েছে৷
◾কমিশন বলেছে, রাজ্য প্রশাসন
শাসকের আইন চলে৷ আইনের শাসন নেই। এই মন্তব্য উড়িয়ে রাজ্য সরকার বলেছে, Protection of Human Rights Act.1993 মেনে কাজ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অথচ আইনের ১৪(৫) নং ধারা ভাঙা হয়েছে। ৭ সদস্যের কমিটি প্রথমে অনুসন্ধান তথ্য দেবে কমিশনকে। সেই তথ্য যাচাইয়ের পর কমিশন সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত বা অন্য কাউকে দিয়ে তদন্তের সুপারিশ করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে কমিটি সরাসরি এক্তিয়ার লঙ্ঘন করে সিবিআই সুপারিশ করেছে যা আইনবিরুদ্ধ।
◾ এই রিপোর্ট রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনিক সদস্যদের অপমান করতেই করা হয়েছে।

◾রিপোর্ট দেখেই বোঝা যায়, এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। রাজ্যের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবেই নেতিবাচক রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।

◾ কমিটির ৭ সদস্যের মধ্যে ৩ জনের সরাসরি বিজেপি যোগ রয়েছে। কেন্দ্রের সরাসরি প্রভাব রয়েছে। তাই এদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত আশা করা যায় না। সদস্যদের অন্যতম:
১) রাজীব জৈন- কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন৷ গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী যখন নরেন্দ্র মোদি, সেই সময় তিনি আমেদাবাদের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো প্রধান ছিলেন। তাঁর ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। ২০১৮ মেয়াদ শেষ হলেও বেআইনিভাবে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত ওই পদে রেখে দেওয়া হয়৷

২) আতিফ রশিদ- এর টুইটার অ্যাকাউন্টে নামেই যুক্ত রয়েছে ‘বিজেপি’ কথাটি৷ এই লোকটি বিজেপির টুইটার হ্যান্ডেলের দায়িত্বে সামলেছেন৷ দিল্লির পুরভোটে বিজেপি হয়ে লড়াই করেছেন।

৩) রাজুবেন দেশাই- ২০১৭ সালে গুজরাতে বিজেপির প্রকল্প ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ এর দায়িত্ব সামলেছেন।
◾ বিজেপি ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মীর বাড়ি পরিদর্শনে যায়নি কমিটি সদস্যরা। সিপিএম, আইএসএফ, কংগ্রেস কর্মীদের বাড়ি পরিদর্শনে যায়নি কমিটি৷

ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৮ জুলাই।

 

spot_img

Related articles

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...

রাজ্যে শুরু SIR প্রস্তুতি: একাধিক পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

গোটা দেশেই এসআইআর লাগু হবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। বিহারে ৬৫ হাজার...