Saturday, August 23, 2025

ভারতের ‘ধর্মীয় স্বাধীনতাহীনতা’ নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ যুক্তরাষ্ট্রের  

Date:

Share post:

ফের ধর্মীয় স্বাধীনতাহীনতা নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (USCIRF)। বিভিন্ন দেশে ধর্মাচরণ সহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নজর রাখা এই সংস্থাটি তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে এই প্রথম নয়, গত কয়েক বছর ধরেই এই বিষয়ে লাগাতার ভারতের কড়া সমালোচনা করে চলেছে সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, গত ১ মে প্রকাশিত সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’-এর তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান, মায়ানমার, চীন, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তান সহ মোট ১৭টি দেশকে এই তালিকার আওতায় আনা হয়েছে। তবে ভারতের বর্তমান অবস্থা ক্রমশই খারাপ হয়েছে জানিয়ে সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ও রাজ্য স্তরের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়েও ধর্মীয় বৈষম্য বেড়েই চলেছে। তবে মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি (Arindam Bagchi) এ বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। এদিন এক বিবৃতিতে সংস্থার প্রতিবেদন নস্যাৎ করে তিনি বলেন, এই ধরনের প্রতিবেদন পেশ করে ইউএসসিআইআরএফ নিজেই নিজেদের বদনাম করছে। পাশাপাশি প্রতিবেদনটিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভারতের গণতন্ত্র ও তার মূল্যবোধ, বহুত্ববাদিতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা সম্পর্কে ওই সংস্থার আরও ওয়াকিবহাল হওয়া উচিত।

ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি, মানবাধিকার হরণ, সংখ্যালঘু নির্যাতন, সংবাদপত্র ও প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ, ঘৃণা ভাষণ এবং রাষ্ট্রীয় স্তরে দমন-পীড়নের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সময়ে সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সরব হয়েছে। ভারত সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে সেসব রিপোর্ট বা অভিমতকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’, ‘অভিসন্ধিমূলক’, ‘অজ্ঞানপ্রসূত’ বলে কটাক্ষ করেছে। মার্কিন সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ধর্মান্তরকরণ ও আন্তঃধর্মীয় সম্পর্কের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া হিজাব ও গোহত্যা নিয়ে বাড়াবাড়ি বেড়েই চলেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মুসলমান, খ্রিষ্টান, শিখ, দলিত ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে। অন্যদিকে, ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা এবং তা খর্ব করা নিয়ে যাঁরা সরব হয়েছেন, তাঁদের ওপর কড়া নজরদারি রাখার পাশাপাশি তাঁদের চরম হয়রানি করা হচ্ছে। তাঁদের সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে।

এমনকি অবৈধ কাজকর্ম রোধ আইনে (UPA) অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকও করা হচ্ছে। যেসব বহুজাতিক বেসরকারি সংস্থা এসব নিয়ে সরব, তাদের বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে (FCRA) ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এদিকে ইউএসসিআইআরএফ তাদের প্রতিবেদনে জো বাইডেন সরকারকে বলেছে, ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনে যেসব সংস্থা গুরুতরভাবে দোষী, ভারত সরকারের সেই সব সংস্থা ও তাদের কর্মকর্তাদের সম্পত্তি অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করা হোক। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞাও জারি করা অত্যন্ত জরুরি। ভারতকে একটি ‘বিশেষ উদ্বেগজনক দেশ’ বলে ঘোষণার জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশও করেছে। তবে তাদের অভিযোগ, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এসব অভিযোগের বহর ও তীব্রতা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

 

 

spot_img

Related articles

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...

রাজ্যে শুরু SIR প্রস্তুতি: একাধিক পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

গোটা দেশেই এসআইআর লাগু হবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। বিহারে ৬৫ হাজার...

আস্থা কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর সভার দিন বুঝিয়ে দিলেন দিলীপ, কটাক্ষ তৃণমূলের

দৃশ্য এক, বিজেপির নক্ষত্রখচিত মঞ্চ। মালা, উত্তরীয়তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) বরণ করছেন একের পর এক বঙ্গবিজেপির...

বাংলা বিদ্বেষীকে পাশে বসিয়ে বাঙালি প্রেম! মোদির দ্বিচারিতাকে ধুইয়ে দিল তৃণমূল

বাংলায় এলেই বাংলা ভাষায় বক্তৃতা। এ তো নরেন্দ্র মোদির রেওয়াজ হয়েছেই। সম্প্রতি তিনি উত্তর ভারতের গোবলয়ের দেব-দেবী ছেড়ে...