মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আশীর্বাদে শিক্ষা জগৎ থেকে রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে লোকসভা ভোটে (Loksabha Election) দাঁড়িয়েছিলেন অধ্যাপক অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। এবং বোলপুর থেকে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে প্রথমবারের জন্য সাংসদ হয়ে লোকসভায় গিয়েছিলেন অনুপম। পরবর্তী সময়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন অনুপম। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর আসনে বিজেপির প্রার্থীও হন। এবং এই দলবদলু গো-হারা হারেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করেনি বিজেপি (BJP)।
তবে এক সময়কার বঙ্গ বিজেপির ‘পোস্টার বয়’ রাহুল সিনহার পদে তাঁকে বসানো হয়। রাহুলকে সরিয়ে বাংলা থেকে বিজেপির জাতীয় সম্পাদক করা হয় অনুপম হাজরাকে। যা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ঘনিষ্ঠ সেই অনুপম সম্প্রতি নানা ভাবে রাজ্য নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন। এমন নালিশ পাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরকারি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ‘দলকে অস্বস্তিতে ফেলা’ অনুপম হাজরার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করলেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। অনুপমকে এবার দলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণ করা হল। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সদর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নেতা অরুণ সিংহ মঙ্গলবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
তবে চুপ করে থাকার পাত্র নন তিনি। ফের বিস্ফোরক অনুপম। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপম হাজরা লিখেছেন, ‘পদ থেকে সরাবার তিন ঘণ্টার মধ্যেই বার্তা-কিছু শর্ত মেনে চললে আবার সব আগের মতো!!!’ উল্লেখ্য, অনুপম হাজরাকে নিয়ে বারবার বিড়ম্বনায় পড়েছে দল। দলের বরিষ্ঠ নেতাদের পদ আঁকড়ে থাকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনুপম। তাদের দুর্নীতি পরায়ণ বলেও কটাক্ষ করেছেন এই বিজেপি নেতা। সম্প্রতি বিশ্বভারতীতে তৃণমূলের ধরনা মঞ্চের সামনেও চলে এসেছিলেন অনুপম।
ওই ঘটনায় যে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট, তার ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। সম্প্রতি সর্বভারতীয় নেতা হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অনুপমকে দেওয়া নিরাপত্তা তুলে নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, যা সরাসরি দেখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। দীর্ঘ দিন কেন্দ্রের ‘ওয়াই ক্যাটেগরি’-র নিরাপত্তা পেতেন অনুপম। শেষপর্যন্ত দলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের পর থেকেই সারিয়ে দেওয়া হল।