Sunday, August 24, 2025

একমাত্র সন্তানের মৃত্যু! কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে নিগ্রহ দম্পতির

Date:

Share post:

চিকিৎসার গাফিলতি রোগী মৃত্যুর অভিযোগ খাস কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Calcutta Medical College and Hospital) বিরুদ্ধে। বুধবার, বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসককে মারধর করলেন মৃত তরুণের বাবা-মা। আগেই হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাসপাতালের তরফে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে বুধবার জানতে আসেন মৃতের বাবা-মা। সেই সময় সুপারের ঘরের সামনে অভিযুক্ত চিকিৎসককে দেখেই মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। নিরাপত্তারক্ষীরা গিয়ে চিকিৎসককে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

বেশ কয়েকমাস আগে ক্যা নসার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বেহালার সরশুনার বাসিন্দা বৃদ্ধ দম্পতি দেবাশিস ও সোমা পালের একমাত্র পুত্র দীপঙ্করের। ইংরাজি অর্নাসের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র দীপঙ্করের হজকিন্স লিম্ফোমা ধরা পড়ে। প্রথমে এসএসকেএম ও সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজে দেখানো হয় তাঁকে। স্বর্ণবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। দেবাশিসের অভিযোগ, চিকিৎসক সব সময় আশ্বাস দিতেন, তাঁর ছেলে সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু দিন দিন পরিস্থির অবনতি হয়। ১৮ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দীপঙ্করকে মেডিক্যা ল কলেজে ভর্তি করা হয়। সোমা পালের অভিযোগ, তাঁদের না জানিয়ে হাই ডোজের কেমোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল দীপঙ্করকে।

২৩ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ওই তরুণ দেওয়া হয়। ২৯ নভেম্বর হৃদরোগে তাঁর মৃত্যু হয়। একমাত্র সন্তানের মৃত্যেুর বিহিত চেয়ে ঘুরছেন বৃদ্ধ দম্পতি। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসকের গাফিলতিতেই এই পরিণাম। এই অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন তাঁরা। ৩ জানুয়ারি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরশুনা থানা এবং মেডিক‌্যাল কলেজের উপাধ‌্যক্ষর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এদিন দেবাশিস ও সোমাকে ডেকে পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তখনই হাসপাতালে গিয়ে স্বর্ণবিন্দুকে সামনে দেখতে পেয়ে ভেঙে পড়েন দম্পতি। তাঁর পোশাক  ধরে টানাটানি করেন। চড়-থাপ্পড় মারেন। কাঁদতে থাকতেন দুজনেই। তাঁদের আর্তনাদ, ‘‘আমাদের সব ফাঁকা হয়ে গেল। শাস্তি চাই।’’ এই ঘটনায় নিজেও ভারাক্রান্ত স্বর্ণবিন্দু বন্দ্যোপাধ‌্যায়। দম্পতির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ বা ক্ষোভ তো তাঁর নেইই। উল্টে তাঁর কথায়, ’’সন্তান হারানোর কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না। ওঁরা আবেগতাড়িত হয়ে এমন কাজ করে ফেলেছেন।’’ ঘটনার আকষ্মিকতা কাটিয়ে চিকিৎসককে সরিয়ে নিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। দম্পতির দুঃখে ব্যথিত সকলেই। তবে, চিকিৎসক নিগ্রহ সমর্থন করেন না কেউই।

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...