আসন সমঝোতা নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে টানাপোড়েনের মাঝেই রবিবার উত্তরে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। শিলিগুড়িতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিতে গিয়ে বাংলা ও বাঙালির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন তিনি। জানালেন, “বাংলায় যে ভালবাসা পেলাম, সম্ভবত কোনও প্রদেশে পাইনি।” পাশাপাশি দেশজুড়ে বিজেপি যে হিংসা ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে তার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়ার বার্তা দিলেন রাহুল।

জোট নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই শিলিগুড়িতে ন্যায় যাত্রা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে রাহুল বলেন, “ভারতে যে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে, তা ছড়িয়ে পড়ছে এক ধর্ম, আর ধর্মের মধ্যে, এক ভাষা, অন্য ভাষার মধ্যে। এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে’। তিনি বলেন, ‘যদি কোনও ভারতীয় চোখ বন্ধ করে নিজেকে জিজ্ঞেস করে, হিংসা-ঘৃণায় আমার লাভ হয় বা দেশের লাভ হয়, ভিতর থেকে উত্তর পেয়ে যাবে, হিংসা ঘৃণা থেকে কারও কোনও লাভ হয় না। কিন্তু আমরা দেখছি, আস্তে আস্তে এই ভালোবাসার দেশটায় ঘৃণা ছড়িয়ে পড়ছে।” এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘যদি কোনও যুবককে জিজ্ঞেস করেন, পড়াশোনার পর কী করতে চান? সবাই বলবে, আমি চাকরি করতে চাই। রোজগার করতে চাই। কিন্তু বাস্তব হল, আজ দেশে যদি কেউ কাজ চায়, তাহলে কাজ মিলবে না। যুবকরা তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারছে না। মনে ঘৃণা,রাগ জন্ম নিচ্ছে।’

এছাড়াও এদিনের কর্মসূচি থেকে বাংলা ও বাঙালির প্রশংসা করে রাহুল বলেন, “যখন ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়াই চলছিল, তখন ইংরেজের বিরুদ্ধে আদর্শগত লড়াই করেছিল বাঙালিরা। এর অর্থ, আপনার বিদ্বজন। আপনারা চিন্তাভাবনা করেন। আপনারা একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে চলতে পারা মানুষ। যেহেতু, আপনারা বাঙালি, তাই আপনাদের দায়িত্ব দেশকে পথ দেখানো। আপনারা যদি দেশকে পথ না দেখান, তাহলে দেশ আপনাদের ক্ষমা করবে না। বাংলার প্রত্যেকের মধ্যে আগুন আছে। ছোট ছোট বাচ্চার মধ্যেও। তাই আপনাদের সবার দায়িত্ব, ঘৃণার বিরুদ্ধে আপনাদের লড়তে হবে। আপনাদের মধ্যে যে ইন্টেলেকচুয়াল ক্ষমতা আছে, তা দিয়ে ভারতকে জুড়তে হবে।”

দু’দিন বিশ্রামের পর, বাংলায় ফের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করছেন রাহুল গান্ধী। এদিন সকালে, জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর মোড় থেকে শুরু হয় রাহুলের যাত্রা। হুড খোলা গাড়িতে চেপে জনসংযোগ করেন তিনি। গাড়িতে বেশ কিছুটা পথ রাহুলের সঙ্গী ছিলেন অধীর চৌধুরী। এরপর শিলিগুড়িতে হুডখোলা জিপে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস সাংসদ। বক্তব্যের গোড়াতেই রাহুল শিলিগুড়ির নাম মুখে আনায় উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। পাল্টা ধন্যবাদ জানিয়ে রাহুল বলেন, ‘আমি বললামই না। আর আপনারা মহব্বতের দোকান খুলে দিলেন। তাও আবার ফ্রিতে। একেবারে মন খুলে।’
