বিচারপতিরা রাজনীতিতে যোগ দিলে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সরকার পক্ষের সুনজরে থাকতে রায়ের উপর প্রভাব পড়েছে, এমন ধারণাও হতে পারেন নাগরিকদের মধ্যে। নাম না করে দেশের প্রথম সারির বিচারপতিদের চাকরি ছেড়েই রাজনীতিতে যোগ নিয়ে তোপ দেশের প্রধান বিচারপতি বি আর গভাইয়ের (CJI B R Gavai)। এবার আর ভারতে নয়। ইংল্যান্ডে (England) গিয়ে ভারতীয় বিচারপতিদের এই ট্রেন্ড নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন প্রধান বিচারপতি।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ ও বিচারপতি থেকে রাতারাতি লোকসভার সাংসদ হয়ে যাওয়া সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিচার প্রক্রিয়ার ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় রচনা করেছে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরে ভারতের বিচার ব্যবস্থায় এই প্রথা বিচারপতিদের মধ্যে বাড়ার বিষয়টিও লক্ষ্যনীয়। আর অভিজিতের রাজনীতিতে যোগের পরেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বিচারপতির আসন থেকে অবসরের আগে যে সব রায় দিয়েছিলেন, বিজেপি নেতাদের পক্ষ নিয়েই বাংলার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কতটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল সেই সব রায়।

গণতান্ত্রিক দেশে বিচার ব্যবস্থার উপর এই ঘটনার প্রভাব এতটাই গভীর যে এবার এই বিষয়ে বিদেশে গিয়েও সরব দেশের প্রধান বিচারপতি। ইংল্যান্ডে (England) সুপ্রিম কোর্টের একটি গোল টেবিল বৈঠকে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বি আর গভাই (CJI B R Gavai) তুলে ধরেন, যদি কোনও বিচারক অবসর গ্রহণের অব্যবহিত পরে কোনও সরকারি পদে যোগ দেন অথবা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আইনের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন, তবে তা প্রবল নীতির প্রশ্ন তোলে, সেই সঙ্গে জনগণের সেই বিষয়ে যাচাই করে নেওয়াও প্রয়োজন।

সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি আলোচনায় যোগ করেন, কোনও বিচারক যদি কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করেন তবে তা সামগ্রিক বিচার ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলে দেয়। যেহেতু সেই বিচারে পছন্দের তারতম্য গুরুত্ব পায়, অথবা সরকারের থেকে সুবিধা পাওয়ার প্রচেষ্টা হিসাবেও গণ্য হতে পারে। অবসরের পরে এই ধরনের কাজের সময় ও পদ বিচার ব্যবস্থার (judicial system) সততার উপর সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন তুলে দেয়। কারণ সেক্ষেত্রে এরকম ধারণা তৈরি হতে পারে যে বিচার প্রক্রিয়ায় (judicial system) নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি ভবিষ্যতে সরকারি সুবিধা পাওয়ার বা রাজনৈতিক যোগ রাখার জন্য প্রভাবিত হয়ে দেওয়া হয়েছিল।

–

–

–

–

–

–

–
–
–
–