উৎপাদন বাড়াতে ও মাছ চাষের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের দুর্নীতি রুখতে এবার নতুন পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। পাঁচ একরের বেশি আয়তনের সরকারি বা খাস জলাভূমি মাছ চাষের (pisciculture) জন্য এবার থেকে ই-অকশনের (e-auction) মাধ্যমে লিজ দেওয়া হবে। চলতি সপ্তাহেই মন্ত্রিসভা পশ্চিমবঙ্গ ভূমি ও ভূমি সংস্কার ম্যানুয়াল (১৯৯১) সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছে। প্রশাসনিক মহলের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে মাছের উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনই সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।

এতদিন বড় জলাভূমি লিজ (lease) দেওয়ার প্রথা ছিল মূলত অফলাইনে (offline) দরপত্র ডাকার মাধ্যমে। এবার থেকে তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে অনলাইন অকশন (online auction) প্রক্রিয়াও। এই ব্যবস্থার জন্য একটি পৃথক পোর্টাল তৈরি করবে মৎস্য দফতর। সংশোধনীর ফলে জেলাশাসকের নেতৃত্বাধীন কমিটিতে ভূমি ও মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র সেচ দপ্তরের আধিকারিকও যুক্ত হবেন। কারণ, অনেক খালও মৎস্যচাষের কাজে ব্যবহৃত হয়।

নিয়মে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে লিজের (lease) আর্থিক সীমা নিয়েও। এতদিন জেলা কমিটি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারত, তার বেশি হলে রাজ্য স্তরে অনুমোদন লাগত। এখন সেই সীমা বাড়িয়ে বছরে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে।

অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও বদল এনেছে সরকার। আগে প্রথমবার দরপত্রে সুযোগ থাকত কেবল ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটি, ফিস প্রোডাকশন গ্রুপ এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন্য। শিল্পোদ্যোগী ও ব্যক্তিগত আবেদনকারীরা আসতে পারতেন কেবল দ্বিতীয়বার দরপত্র ডাকা হলে। নতুন সংশোধনীতে প্রথমবারেই শিল্পোদ্যোগীরাও অংশ নিতে পারবেন। তবে যাতে স্থানীয় ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ, গ্রুপ ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্বার্থ বিঘ্নিত না হয়, তার জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাঁতার সারাদিন: অদৃজা, স্নিগ্ধার উপস্থিতিতে দিনভর সাঁতারুদের উৎসব

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে এক ‘কমিটি অব মিনিস্টার্স’ গঠন করেছিলেন। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই সংশোধনী আনল রাজ্য। বিশেষজ্ঞ মহলের আশা, এর ফলে রাজ্যে মাছ চাষ আরও গতি পাবে।

–

–

–

–
