রাজ্যে আতশবাজি শিল্পকে সংগঠিত ও নিরাপদ পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। জেলায় জেলায় ‘বাজি ক্লাস্টার’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ছয়টি জেলায় জমি চিহ্নিত হয়েছে—উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, হাওড়া ও দার্জিলিং।

জেলা প্রশাসনের তরফে সারা বাংলা আতশবাজি সমিতির কর্তা বাবলা রায়কে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাপে ধাপে প্রতিটি জেলায় একটি করে বাজি ক্লাস্টার গড়ে তোলা হবে। রাজ্য মন্ত্রিসভা আগেই আতশবাজি শিল্পকে ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের মর্যাদা দিয়েছে। এবার সেই সিদ্ধান্তের অঙ্গ হিসেবেই আতশবাজি নির্মাণ থেকে বিক্রি পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াকে আরও সুরক্ষিত, নিয়মতান্ত্রিক ও পরিবেশবান্ধব করে তোলার উদ্যোগ শুরু হলো।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতিটি ক্লাস্টারে বাজি উৎপাদনকারী ইউনিটগুলি নির্দিষ্ট এলাকায় একত্রিতভাবে কাজ করবে। এতে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট কারখানাগুলি নিরাপদ পরিকাঠামোর মধ্যে আসবে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকটাই কমবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে। পাশাপাশি, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

গত বছর পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে অবৈধ আতশবাজির কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই শিল্পের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকারের এই ক্লাস্টার প্রকল্পকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শিল্প মহল।

সারা বাংলা আতশবাজি সমিতির সভাপতি বাবলা রায় জানিয়েছেন, “সরকারের এই পদক্ষেপকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। কোথায় জমি বরাদ্দ হচ্ছে, কীভাবে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে এবং শিল্পীদের কীভাবে সহযোগিতা দেওয়া হবে—এসব বিষয়ে শীঘ্রই রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হবে।”

আতশবাজি শিল্পে যুক্ত উদ্যোক্তাদের মতে, এত দিন অসংগঠিতভাবে চলা এই শিল্প ক্লাস্টার পদ্ধতির মাধ্যমে আরও শৃঙ্খলিত হলে উৎপাদনের গুণমান ও নিরাপত্তা দুই-ই বাড়বে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে দেশ-বিদেশে বাংলার আতশবাজির বাজার আরও প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হবে।

আরও পড়ুন – জন্মদিনও ত্রিপুরায় সহযোদ্ধাদের নিয়ে লড়াই বীরবাহার: বিজেপির কুৎসাকে ধুয়ে দিলেন কুণাল

_

_

_
_
_