দীপাবলির আলো এবার অন্ধকারে ঢেকে গেল বহু পরিবারের জীবনে। বাজির নামে মধ্যপ্রদেশে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে এক বিপজ্জনক বিস্ফোরক— ‘কার্বাইড গান’। দেখতে খেলনার মতো এই ডিভাইস থেকেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে গুরুতর আহত শতাধিক শিশু, তাঁদের মধ্যে ১৪ জন ইতিমধ্যেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। তিন দিনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৫ জনেরও বেশি শিশু চোখের গুরুতর আঘাত নিয়ে ভর্তি হয়েছে।

রাজ্যের বিদিশা জেলায় পরিস্থিতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক। সরকার ১৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও, সেখানকার বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হয়েছে এই বিপজ্জনক ‘দেশি ফায়ার ক্র্যাকার গান’। দাম মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, দেখতে আকর্ষণীয়— অথচ ফাটলে ক্ষতি হয় বোমার মতোই।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, এই তথাকথিত খেলনা আসলে একটি হাতে তৈরি বিস্ফোরক। চোখে বা মুখে লাগলে মারাত্মক ক্ষতি হয়। ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালেই গত ৭২ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ২৬ জন শিশু। হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ এখন ভর্তি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়া অল্পবয়সী রোগীতে।

দৃষ্টিশক্তি হারানো ১৭ বছরের নেহা জানিয়েছে, “দীপাবলিতে মজা করার জন্য কার্বাইড গান কিনেছিলাম। যখন সেটা ফেটে যায়, চোখে আগুনের মতো জ্বালা অনুভব করি। এখন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।” অপর এক কিশোর রাজ বিশ্বকর্মা জানায়, “সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখে বাড়িতেই বানানোর চেষ্টা করেছিলাম। সেটি মুখে ফেটে যায়, আর তার পর থেকেই কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।”

এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। বিদিশা জেলায় বেআইনি বিক্রির অভিযোগে ইতিমধ্যেই ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও ‘কার্বাইড গান’-এর ছড়াছড়ি নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক ও অভিভাবকরা।

চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, “এটি কোনও খেলনা নয়, বরং একটি বিপজ্জনক বিস্ফোরক। শিশুদের হাত থেকে এই বস্তু দূরে রাখাই একমাত্র উপায়।” দীপাবলির উৎসবে প্রাণঘাতী এই খেলনার আগুনে পুড়ছে মধ্যপ্রদেশের একের পর এক নিষ্পাপ চোখ।

আরও পড়ুন – চাপ দিয়ে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করা হয়: বিস্ফোরক নারদ মামলার প্রথম তদন্তকারী CBI আধিকারিক

_

_

_
_


