Saturday, December 20, 2025

চন্দননগর নয়! কোথা থেকে সূচনা বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর? জানুন ইতিহাস 

Date:

Share post:

জগদ্ধাত্রী পুজোর নাম উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে গঙ্গাপাড়ের শহর চন্দননগরের ছবি—চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা, সুবিশাল প্রতিমা আর অসংখ্য দর্শনার্থীর ঢল। কিন্তু ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, এই পুজোর গোড়াপত্তন আসলে হয়েছিল নদিয়ার কৃষ্ণনগরে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে। জগদ্ধাত্রী পুজোর বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরলেন কৃষ্ণনগর বউবাজার বারোয়ারী কমিটির সম্পাদক অনুপম পাল। সঙ্গে তুলে ধরলেন মা মহেশ্বরী জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাসও।

ইংরেজ শাসনের সময়ে নবাব মিরকাশিম যখন বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে ব্রিটিশপন্থী রাজাদের বন্দি করেছিলেন, সেই তালিকায় ছিলেন কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও তাঁর পুত্রও। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে কৃষ্ণচন্দ্র জানতে পারেন, দুর্গাপুজো ইতিমধ্যেই শেষ। মন খারাপ হয়ে যায় তাঁর। সেই সময়ই কথিত আছে, দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে তাঁকে জগদ্ধাত্রী রূপে পুজোর নির্দেশ দেন। দেবীর আদেশ অনুযায়ী রাজা শুরু করেন এই নতুন পুজো, যা পরবর্তীকালে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির চার দেওয়াল পেরিয়ে শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৭৬৩-৬৪ সালের দিকেই জলঙ্গী পাড়ে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয়।

অন্যদিকে চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় কিছু বছর পর। ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ ফরাসি দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ রায় তাঁর নিজের বাড়িতে দেবীর পুজো শুরু করেন। আরেকটি মত অনুযায়ী, কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারামের বিধবা কন্যা ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলায় রাজার অনুমতি নিয়ে প্রথম পুজোর সূচনা করেন। সেই পারিবারিক পুজোই পরে সর্বজনীন হয়ে ওঠে। আজ সেই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোই রাজ্যজোড়া খ্যাতি পেয়েছে। কারণ শুধু দেবী আরাধনা নয়, এখানে পুজো মানে আলোর উৎসব। আলোকসজ্জার জগৎখ্যাত নৈপুণ্য, রঙিন ঝলক আর শিল্পসম্মত প্রতিমা—সব মিলিয়ে চন্দননগরের পুজো এখন আন্তর্জাতিক আকর্ষণের কেন্দ্র। তবুও ইতিহাস বলছে, জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রথম আলোর শিখা জ্বেলেছিল কৃষ্ণনগরের রাজবাড়িতেই। সেই ঐতিহ্যের উত্তরসূরি আজও গর্বের সঙ্গে বলে—জগদ্ধাত্রী পুজো জন্মেছিল নদিয়ার মাটিতেই।

অন্যদিকে কৃষ্ণনগর বউবাজার এলাকার মা মহেশ্বরী জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন যেহেতু মা জগদ্ধাত্রী মহাদেবের অর্ধাঙ্গিনী সেইখান থেকেই নাম এসেছে মা মহেশ্বরী। রাজবাড়ীর প্রথা আজও অপরিবর্তিত রেখেই পুজো হয়। রথের দিন হয় কাঠামোপুজো। জলঙ্গী নদীর মাটি এনে শুরু হয় প্রতিমা নির্মাণের কাজ। প্রথামতই পুজো এখানে একদিনই। অঞ্জলি দেওয়া থেকে বিনামূল্যে প্রসাদ বিতরণ চলে সেদিন। দশমীতে বেয়ারাদের কাঁধে চেপে মায়ের বিসর্জন হয়।

আরও পড়ুন – নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সহজ জয়, কোন অঙ্কে বিশ্বকাপের সেমিতে ভারত?

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

উচ্চমানের চিকিৎসা পরিষেবা সবার অধিকার: #Sebaashray2 শিবির ঘুরে রোগী ও চিকিৎসকদের বার্তা অভিষেকের

উচ্চমানের চিকিৎসা পরিষেবা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দিতে নিজের সংসদীয় এলাকায় ‘সেবাশ্রয়’ (Sebaashray) চালু করেছিলেন তৃণমূলের (TMC)...

বাংলাদেশের অশান্তির আঁচ এবার ক্রিকেট মাঠে! অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে বাড়ছে বিপিএল বাতিলের সম্ভাবনা

অশান্তি আর নৈরাজ্যের বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের অফিস থেকে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আক্রমণের পর এবার কি উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে...

বিজয় হাজারে ট্রফির প্রস্তুতিতে সমস্যা বাড়ল বাংলা দলের

বিজয় হাজারে ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে বাংলা। কিন্তু প্রথম দিন মাঠে যেতেই সমস্যার সম্মুখীন হতে...

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দায়িত্ব বাড়লো অক্ষরের, ওয়াইল্ড কার্ডে চমক দিলেন ঈশান!

বছর ঘুরলেই ক্রিকেটপ্রেমীদের নজরে বাইশ গজে কুড়ি-কুড়ি বিশ্বকাপের লড়াই (T20 World Cup 2026)। পূর্ব ঘোষণা মতোই শনিবার ২০২৬...