জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে ফের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে (Gyanesh Kumar) কড়া চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার, লেখা সেই চিঠিতে চুক্তিভিত্তিক ডেটা এন্ট্রি অপারেটর বা বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের কর্মীদের SIR সংক্রান্ত ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজের না লাগানো সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে বেসরকারি আবাসনকে ভোট গ্রহণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। চিঠিতে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (X-Handle) পোস্ট করে মমতা লেখেন, “সাম্প্রতিক নির্বাচন কমিশনের দুটি বিরক্তিকর সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি আমার উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।”

দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে লেখা দু-পাতার চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের সিইও–র দফতর এমন কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে যা নির্বাচন পরিচালনার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার পরিপন্থী এবং যার ফলে প্রশ্ন উঠছে কমিশনের ভূমিকা ও উদ্দেশ্য নিয়েও। প্রথমেই তুলে ধরেছেন সিইও–র দফতর থেকে জারি হওয়া আরএফপি (Request for Proposal)–র বিষয়টি। জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা আর চুক্তিভিত্তিক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরদের কাজে না লাগান। অথচ একই সময়ে সিইও দফতরই আবার এক বছরের জন্য ১,০০০ ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও ৫০ সফটওয়্যার ডেভেলপারের নিয়োগে আরএফপি জারি করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “যেখানে জেলাগুলিতে আগে থেকেই প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী রয়েছেন, সেখানে হঠাৎ এই নতুন নিয়োগের প্রয়োজন কেন? জেলাগুলি স্বাধীনভাবে কর্মী নিয়োগ করতে পারে। তাহলে CEO-র দফতর কেন তাদের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে? এই পদক্ষেপ কি কোনও রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষার্থে নেওয়া হচ্ছে?” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এই আরএফপি-র সময় ও প্রক্রিয়া সন্দেহ তৈরি করছে এবং কমিশনের নিরপেক্ষতার ভাবমূর্তিকে আঘাত করছে।

চিঠির দ্বিতীয় অংশে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) কঠোর ভাষায় আপত্তি জানিয়েছেন বেসরকারি আবাসন কমপ্লেক্সের মধ্যে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে। তাঁর দাবি, এতদিন ধরে সরকারি বা আধা–সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রাখা হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত থাকে। বেসরকারি আবাসনে বুথ হলে তা স্বভাবতই বৈষম্য তৈরি করবে, ‘হ্যাভ’ ও ‘হ্যাভ–নট’–এর মধ্যে বিভাজন বাড়াবে এবং ভোটের ন্যায্যতা নিয়ে সন্দেহের সুযোগ তৈরি করবে। মমতা লেখেন, “প্রাইভেট কমপ্লেক্সে ভোটকেন্দ্র তৈরি করলে বৈষম্য তৈরি হবে, একদিকে সচ্ছল বাসিন্দারা, অন্য দিকে সাধারণ মানুষ। এটি কি কোনও রাজনৈতিক দলের স্বার্থে করা হচ্ছে?”

Sharing herewith my today’s letter to the Chief Election Commissioner, articulating my serious concerns in respect of two latest and disturbing developments. pic.twitter.com/JhkFkF6RWs
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 24, 2025
মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন, এই সিদ্ধান্ত আদৌ কেন বিবেচনা করা হচ্ছে এবং কোন রাজনৈতিক দলের চাপের কারণে কি কমিশন এই পথে হাঁটছে? তাঁর মতে এই প্রস্তাব নির্বাচন প্রক্রিয়ার মৌলিক নীতিকে আঘাত করবে।
আরও খবর: টেলিসম্মানের পুরস্কার মূল্য ক্যান্সার আক্রান্তদের দান চন্দনের, ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রীকে

চিঠির শেষে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের মর্যাদা, নিরপেক্ষতা ও সুনাম যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে সেদিকে নজর দিতে। লেখেন, “আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, বিষয়গুলি সর্বোচ্চ গুরুত্ব, নিষ্পক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা করুন। কমিশনের মর্যাদা যেন কোনওভাবেই নষ্ট না হয়।”

–

–

–

–


