দিল্লি হাই কোর্টের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে সিবিআই-এর করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) জামিন খারিজ হল অভিযুক্ত প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের (KUldeep Sengar)। মামলায় সব পক্ষকে নোটিশ পাঠানোর পাশাপাশি নির্যাতিতাকে বিশেষ লিগাল এইড (free legal aid) দেওয়ার প্রস্তাব দিল প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ (Surya Kant CJI)।

একজন বিধায়ক বা সাংসদ যদি জনপ্রতিনিধি হিসাবে অতিরিক্ত কোনও সুবিধা পেতে পারেন না, এমনটাই এই মামলার শুনানিতে সোমবার জানালো প্রধানবিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী, বিচারপতি এ জি মাসি-র বেঞ্চ। সেঙ্গারের জামিনের সপক্ষে তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেন, একজন সাংসদ বা বিধায়ককে জনপ্রতিনিধি হিসাবে পকসো (POCSO) আইনে একজন সাধারণ সরকারি কর্মীর সঙ্গে এক সারিতে বসানো যায় না। আর সেখানেই প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই যুক্তি যদি মেনে নেওয়া হয় তবে একজন কনস্টেবল বা পাটোয়ারি সরকারি কর্মী (public servant) হবেন। কিন্তু সাংসদ বা বিধায়ক হবেন না, এবং সেই যুক্তিতেই তারা ছাড় পেয়ে যাবেন।

উন্নাও ধর্ষণের ঘটনায় ২০১৮ সাল থেকে জেলে বিজেপি নেতা সেঙ্গার। সেই যুক্তিতে ধর্ষণের ঘটনায় তাকে ২৩ ডিসেম্বর জামিন দিয়েছিল দিল্লি হাই কোর্ট। কিন্তু ধর্ষিতার বাবার খুনের অভিযোগে সেঙ্গার এখনও জেলবন্দি। দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। কার্যত তাতেই আশ্বস্ত উন্নাও-এর ধর্ষিতা। তাঁর বিশ্বাস ছিল সুপ্রিম কোর্টে তিনি বিচার পাবেন।
সোমবারের শুনানিতে সিবিআই-এর তরফে শুনানি করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি তুলে ধরেন, পকসো আইনে সেঙ্গারকে সরকারি কর্মী হিসাবে দোষী হিসাবে তুলে ধরা হয়েছিল, কারণ ঘটনার সময়ে তিনি নিজের পদের অপব্যবহার ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধর্ষণের মতো অপরাধ সংঘটিত করেছিলেন। পাল্টা সেঙ্গারের আইনজীবীরা দাবি করেন, সাংসদ বা বিধায়কদের সাধারণ সরকারি কর্মীদের (public servant) সঙ্গে এক আসনে বসানো যায় না। সেখানেই কড়া অবস্থান নেয় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।

আরও পড়ুন : ধর্ষককে জেলমুক্তি! উন্নাও ধর্ষণে ফের জামিনে ‘পুরষ্কৃত’ বিজেপি নেতা

জামিন খারিজে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সাধারণভাবে নিম্ন আদালতের জামিনের বিরোধিতা উচ্চ আদালত করে না। কিন্তু এক্ষেত্রে আইনি বক্তব্য অবশ্যই রয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তি অন্য মামলায় হেফাজতেই রয়েছেন। নির্যাতিতারও সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে আইনে দ্বারস্থ হওয়ার। তিনি প্রয়োজনে বিনামূল্যে আইনি সহযোগিতা পাবেন। নিজে অভিযোগ দায়েরও করতে পারেন। এরপরই জামিন খারিজ করে সব পক্ষকে নোটিশ জারি করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।



