বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব হল দুর্গোৎসব। আর তারই একটি অঙ্গ হল কুমারী পুজো। সাধারণত, কোনও না কোনও ব্রাহ্মণ পরিবারের নাবালিকা শিশুকে কুমারী হিসেবে পুজো করা হয়। তবে এবার সেই কুমারী পুজোকে কেন্দ্র করেই দর্জিপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোক্তরা এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রচলিত প্রথার বাইরে বেরিয়ে এসে ন’জন বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুকন্যাকে কুমারী বা নবদুর্গা হিসেবে পুজো করা হয়েছে এই পূজা মণ্ডপে।
এ বছর ৮৮ বছরে পা রেখেছে উত্তর কলকাতার দর্জিপাড়া সর্বজনীনের এই পুজো। আর মহানবমীর মাহেন্দ্রক্ষণে অভিনব কায়দায় সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে কুমারী পুজো। যারা কুয়ারী হিসেবে পুজিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ থ্যালাসিমায় আক্রান্ত তো কেউ আবার মারণরোগ ক্যান্সারের সঙ্গে জীবনের যুদ্ধ লড়ছে। আবার কেউ কেউ আছে দৃষ্টিহীন। কিন্তু আজ, সোমবার মহানবমীর শুভলগ্নে এই ছোট ছোট মেয়েদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে দর্জিপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি।
আরও পড়ুন – বনেদিবাড়ির পুজোয় শিরোনামে চোরবাগান শীলবাড়ি
এই অভিনব উদ্যোগে সামিল ছিলেন এলাকার কাউন্সিলর মোহন কুমার গুপ্ত। তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা একটা অভিনব উদ্যোগ। আমরা যখন ছোটবেলায় পুজো দেখতাম, তখনকার আবেগ ছিল আলাদা। এখন সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেককিছুই পরিবর্তনশীল। এখন সাবেকিয়ানার থেকে থিমের আধিক্য বেশি। কোথাও আবার সাবেকিয়ানা ফিরে এসেছে। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে কুমারী পুজোয় এমন ভাবনা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। মূলত, একজন মেয়েকেই কুমারী হিসেবে পুজো করা হয়। কিন্তু এখানে একসঙ্গে ন’জনকে পুজো করা হয়েছে, তাও আবার এমন ন’জন, যারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। এই ভাবনাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। সত্যি তো। ওদের মধ্যেও তো মা আছেন। তাই ওরাও এই সমানের যোগ্য ও ওরাও কুমারী হতে পারে, সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছে দর্জিপাড়া সর্বজনীন কমিটি।’
কুমারী হিসেবে সেজে উঠে খুশি ওরাও। ওদের কথায়, ‘ভীষণ ভাল লাগছে। আগে কখনও এমন হয়নি। তাই খুব আনন্দ লাগছে।’ এই নয় শিশুকন্যাকে রীতি-আচার মেনেই কুমারী রূপে পুজো করা হয়। যা দেখতে অনেক দর্শনার্থীরাও ভিড় জমায় নবমীর সকালে দর্জিপাড়া সর্বজনীনের মণ্ডপে।
আরও পড়ুন – সুরদায়িনী দুর্গা, পুজোর থিমে শ্রদ্ধা কালিকাপ্রসাদকে