বিয়ের উৎসবে মাতোয়ারা সকলে, তারই মাঝে গুলির আঘাতে প্রাণ গেল ফটোগ্রাফারের

উৎসব কিংবা আনন্দের আসর অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে। আবেগের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে যা হয়, এবার তাই হল। বেঘোরে প্রাণ হারালেন নিরীহ-নিরপরাধ এক ফটোগ্রাফার। তাঁর একটাই দোষ ছিল, কিছু রোজগারের তাগিদে বা পেশার তাগিদে বিয়ে বাড়িতে ফটোগ্রাফি করা। এবং তারই মাশুল দিতে হল জীবন দিয়ে।

বিয়েবাড়িতে তখন পাত্র ও পাত্রী পক্ষের সকলেই উপস্থিত। আনন্দ-উদ্দীপনার পারদ তুঙ্গে। রীতি মেনে মালা বদলের সময় এসে পড়েছে। পাত্র-পাত্রী মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। একে অপরের গলায় পরিয়ে দিচ্ছেন মালা। এরমধ্যেই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ করতে কয়েকজন অত্যুৎসাহী বার করলেন বন্দুক। তারপর শূন্যে গুলি চালাতে থাকলেন। নিছকই বিবাহের উৎসবের অঙ্গ হিসাবে এমনটাই করা। তবে সেই শূন্যে গুলির সব গুলি শূন্যে যায়নি। অতি আবেগের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এবং তাদের বন্দুকের গুলি অসাবধানতায় সোজা গিয়ে লাগে বিয়ের ফটোগ্রাফিতে ব্যস্ত ফটোগ্রাফারের বুকে। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।

বিয়ে বা এমন ধরনের আনন্দ অনুষ্ঠানে গুলি চালিয়ে আনন্দের বহিঃপ্রকাশের প্রবণতা উত্তর ভারতে রয়েছে। এটাই তাদের ট্রাডিশন বা রীতি। কিন্তু আনন্দের বই প্রকাশ করতে গিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটবে, সেটা হয়তো তারা কল্পনা করতে পারেনি।

উৎসবের মুহূর্তে বন্দুক থেকে নির্গত আনন্দের বহিঃপ্রকাশ এক তরতাজা প্রাণ কেড়ে নেবে সেটা অভাবনীয়। ঘটনা বিহারের বৈশালী জেলার চণ্ডী ধনুষ গ্রামে। যেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ার পর বিট্টু শাহ নামে ওই ফটোগ্রাফারের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। অভিযোগ,পুরো ঘটনা চাপা দিতে দ্রুত তাঁর দেহ বিয়ে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে কাছের একটি ঝোপঝাড় ঘেরা জায়গায় ফেলে আসে কয়েকজন। তারপর বিয়ের অনুষ্ঠান যেমন চলছিল তেমনই চলতে থাকে। যেন কিছুই হয়নি।

শনিবার সকালে এই ঘটনার খবর পুলিশের কাছে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। তারপর তল্লাশি শুরু হয়ে বিট্টু শাহর দেহ ঝোপের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। তারপর শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দে গুলি চালাতে গিয়ে গুলি ছিটকে মৃত্যুর ঘটনা এটা প্রথম নয়। এমন ঘটনা বিহার, উত্তরপ্রদেশে অনেকে ঘটেছে। কিন্তু সকলের দাবি, এবার এটা বন্ধ হোক। কারও আনন্দ যেন অন্যের নিরানন্দের কারণ না হয়ে ওঠে।

Previous articleখড়্গপুরে শেষবেলার প্রচারে তৃণমূল-বিজেপি
Next articleরবিবার সকালেই সুপ্রিম কোর্টে মহারাষ্ট্র-শুনানি