এনকাউন্টার নিয়ে বিরুদ্ধ মতের বিরুদ্ধে স্পষ্ট কিছু কথা

এনকাউন্টার নিয়ে 3টি বিরুদ্ধ মত পড়লাম…

১.মানুষের বিশ্বাস তলে গেল। বিচার ব্যবস্থার গালে এটা ৮২ সিক্কার একটা থাপ্পড়।

কালকের উন্নাও ভুলে গেলেন?

এই বিচার ব্যবস্থার ফলেই একজন ধর্ষক জামিনে মুক্তি পেয়ে কাল 90 ভাগ শরীর পোড়ালো.. খবরটা শুনে আমরা মেয়েরা কেমন বিশ্বাস রেখেছি বিচার ব্যবস্থার প্রতি জানতে চেয়েছেন একবারও? বিচারে ৬বছর আগে সেলাই মেশিন নিয়ে বেরোনোর সময় আপনি তাহলে সত্যি খুশি হয়েছিলেন? আপনার কখনো স্পর্ধা, বুকের পাটা হয়েছে নির্ভয়া,দিশার মায়ের চোখের দিকে চোখ রেখে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখার কথা বলতে? যদি না হয়ে থাকে তো আপনি বসুন এবং একদম চুপ করে বসুন!!!

২. পুলিশের এটা হিরো সাজার ইচ্ছা যা সমাজের পক্ষে দুর্দিন

আমাদের এখানে কামদুনি বলে একটা জায়গা আছে ..ভুলে যাননি নিশ্চয়ই? ওই ঘটনার পশুগুলো বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় পড়েছি খবরের কাগজে। অশোক বাবু যে খুব বড় বড় লিখেছেন আজ দেখলাম…তা প্রাক্তন বিচারপতি, সুজেট শেষ দিনগুলো চরম অর্থাভাবে কাটিয়ে পৃথিবীতে আর রইলেনই না..কাদের-এর শাস্তির কি হল?

পশুদের হিরো সাজার থেকে পুলিশরা গোটা ১০বার সাজলে অসুবিধা কোথায়? আমার তো উল্টে মনে হয় স্রোতের বিপরীতে পোস্ট করে কিছু লোক হিরো সাজছেন। বাহুবলী ২এর সবচেয়ে প্রশংসিত দৃশ্য কোনটি??? “Aurat par hat uthanewale ka hat nahi kat te..Kat te hain uska gala”.. হাততালি আজও কানে বাজে !!!

৩. আজকের দিনে গনতন্ত্রের অন্ধকার।

Excuse Me? আপনাদের এই গণতন্ত্রের 50% আমরা মেয়েরা Sirji… tax আমরাও pay করি। ওই যে সিকিউরিটি,সেলাই মেশিন,মটন, ফ্রায়েড রাইস..ওতে আমাদেরও contribution আছে। কখনও শুনেছেন একটা ছেলে বারবার ভয় পেয়ে তার বাড়ির লোককে কল করছে আর বলছে “আমার খুব ভয় লাগছে”? কখনও শুনেছেন মরে যাওয়ার পরেও বারবার কোনো পুরুষকে ছিঁড়ে খাওয়া হয়েছে? কখনও শুনেছেন 4 জন অভিযুক্ত মহিলা সবার সামনে জামিনে বেরিয়ে অভিযোগকারী পুরুষের গায়ে আগুন দিয়েছেন? কখনও এমন শুনেছেন কোনো মহিলা পুরুষের ভেতর রড ঢুকিয়েছেন বা পেট পর্যন্ত চিরে দিয়েছেন? শুনে থাকলে সাম্প্রতিককালে কটা শুনেছেন? কালকেই মালদার ঘটনাটা দেখেছেন? নাকি আনন্দবাজার কিছু লেখেনি বলে আপনাদেরও চোখে পড়েনি? আসিফার ওই দিনগুলো খুব আলো ছিল বলুন?

আজ ভোরে খবরটা শুনেই সাধারণত জাস্টিন বিবার, আয়ুষ্মান খুরানা নিয়ে ব্যস্ত থাকা সোহাগও খুব খুশি। দেখি টিভি চালিয়ে খবর দেখছে। আমি চা করছি..পাশে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো “2 মাসের শিশুকে ঐরকম কি করে করতে পারে মানুষ?”

আমি বুঝলাম যাবতীয় বিষয় আমায় শেখাতে হলেও ‘ঐরকম’টা আমায় বুঝিয়ে দিতে হয়নি, ও সেটা স্কুল থেকেই বুঝে এসেছে।এই বয়সী শ্বেতা কিন্তু জানতো না। বললো “আমরা তো তাহলে কেউ সেফ নেই”

এরচেয়ে নিকষ কালো অন্ধকার আর কিছু হয় নাকি?

না আমরা চাইনি আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হোক অপরাধীদের, আমরা শুধু চেয়েছিলাম দ্রুত শাস্তি। এক্ষেত্রে ‘উদ্দ্যেশ্য না অভিপ্রায়’ সেটা দেখবো না। শুধু দেখবো বাড়ির লোকগুলো কতটুকু শান্তি পেলেন, আমরা কতটুকু স্বস্তি পেলাম আজ ভোর হতে না হতেই।

একজন মৃত্যুমুখে আজ হাসপাতালে..জ্যোতির মা আজও অপেক্ষায় রায় দানের..প্রিয়াঙ্কার মা বাবা না হয় আজ একটু শান্তি পেলেন। ওনারা তো বলেছেনও যে ওনারা খুশি। ..কেউ তো কাউকে খুশি করলো!!

অনেকে বলছেন এর চেয়েও কঠিন শাস্তি..যেমন কপালে রেপিস্ট ছাপ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া যাতে সারা জীবন ভুগতে হয়। না! কারন তারা যে বেরিয়ে আক্রোশবশত অন্য নারীকে আবার ছিঁড়ে খাবে না তার কোন গ্যারেন্টি? তখন শিকার আরও নারীরা হলেও হতে পারে এটা ভেবেছেন? মনস্তত্ব বড় সাংঘাতিক জিনিস!! যারা জঘন্যতম অপরাধের পর ভালোমন্দ গিলতে পারে তাদের ওপর ভরসা করে অন্য একজন মেয়েরও জীবন বাজি রাখা উচিত না বলে আমার অন্তত মনে হয়।

দ্রুততম শাস্তি চেয়েছিলাম…একবার অন্তত দেখে নিলাম

শান্তি!!স্বস্তি!!

Previous articleভাটপাড়া পুরসভায় অনাস্থা আনল তৃণমূল
Next articleসেদিন কী ঘটেছিল? হাসপাতালের বেডে শুয়ে শোনালেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা