ভোট দিয়েও এবার CAA-র বিরুদ্ধে কোর্টে অগপ, গভীর সংকটে অসম বিজেপি

সরাসরি ‘অশিক্ষিত’ বললে অনেকের গায়ে লাগবে৷ কিন্তু শিক্ষার অভাব তো স্পষ্টই হলো৷

যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের খসড়া পড়ে, বুঝে এবং যুক্তিসঙ্গত মনে করে সংসদে বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছে অসম গণ পরিষদ, এখন আন্দোলনের চাপে বিজেপির সঙ্গী সেই অসম গণ পরিষদ মত বদল করে বিজেপির পাশ থেকে এক রকম ভেগেই গেলো৷ এই মুহূর্তে অসম গণ পরিষদ বা অগপ-র কাছে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন জাতীয় স্বার্থবিরোধী৷

শুধুই এটুকুই নয়, CAA খারিজের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে বিজেপির জোটসঙ্গী অসম গণ পরিষদ৷ প্রশ্ন উঠেছে, বিলের ভাষার তো বদল হয়নি, তাহলে সেদিন বিলের খসড়া পড়ে কি বুঝেছিলো অগপ ? কেন সেদিন বিল সমর্থন করেছিলো ? কি পড়ে অগপ-র সেদিন মনে হয়েছিলো এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা আইন সাধারন মানুষের স্বার্থেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পেশ করেছে ? আর আজ কেন ওই CAA খারিজ করার দাবিতে শীর্ষ আদালতে যাচ্ছে ? শিক্ষার অভাব না থাকলে কেউ এমন করে লোক হাসাতে পারে ?

সংসদে সমর্থনের পর অসমে এই মুহূর্তে নাগরিক আইনের বিরোধিতায় নেমেছে অসম গণ পরিষদ৷ সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলো এই দল৷ কিন্তু তিন-চার দিনের মধ্যেই মতবদল করলো অগপ৷ জোটসঙ্গীর এই পদক্ষেপের ফলে বিজেপিতেও মতবিরোধ দেখা গিয়েছে এবং অনেক দলীয় নেতা-কর্মী ইতিমধ্যে পদত্যাগও করছেন।

একই ইস্যুতে তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে বিজেপি’র অভ্যন্তরেও৷ বিজেপির প্রবীণ নেতা জগদীশ ভুঁইয়া, যিনি অসম পেট্রোকেমিকেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন, শুক্রবার দল এবং পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিজেপি থেকে পদত্যাগ করেছেন রাজ্যের চলচ্চিত্র অর্থ উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান তথা অসমিয়া সুপারস্টার যতীন বোরা। তিনি বলেছেন, “আমি CAA মানি না। আমার পরিচয় যতীন বোরা এবং তা অসমের মানুষে কারণেই৷ আমি এই ইস্যুতে অসমের মানুষের সঙ্গেই রয়েছি।” যতীন বোরা ২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। অসমের আর এক জনপ্রিয় অভিনেতা রবি শর্মাও বিজেপি ছেড়েছেন। অসমিয়া চলচ্চিত্র সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন সদস্য এই বিলের বিরোধিতা করেছেন এবং এর প্রতিবাদেও সরব হয়েছেন।

শনিবার অগপ’র সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর দলের এই অবস্থান ঘোষণা করা হয়েছে। অগপ বিতর্কিত CAA আইনের বিরুদ্ধে এখন সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অগপ নেতারা বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখাও করবেন৷ অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের নেতৃত্বে বিজেপি নেতৃত্বাধীন অসম মন্ত্রিসভায় তাদের 3 জন মন্ত্রী রয়েছে৷ অগপ-র এই সিদ্ধান্তে ক্ষমতাসীন জোটে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে৷ অগপ থেকে দলে দলে অসংখ্য নেতা-কর্মীই পদত্যাগ করছেন। পদত্যাগীদের অভিযোগ, রাজ্য নেতৃত্ব নতুন আইনের বিরুদ্ধে জনগণের অনুভূতির বিচার করতে ব্যর্থ।

আরও পড়ুন-সারদেশ্বরী আশ্রমের রজত জয়ন্তী বর্ষে আনন্দে মাতোয়ারা ভক্তরা

 

Previous articleসারদেশ্বরী আশ্রমের রজত জয়ন্তী বর্ষে আনন্দে মাতোয়ারা ভক্তরা
Next articleরাজ্যের ছয় জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা