বিজেপি ঘৃণার রাজনীতি করছে, আমরা ভালবাসার রাজনীতি করছি: মমতা

“বিজেপি ঘৃণার রাজনীতি করে। আমরা ঘৃণার বদলে ভালবাসার রাজনীতি করছি। সব ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় মিলে একসঙ্গে আন্দোলন করছে। শঙ্খ-ঘন্টা-কাঁসর বাজিয়ে শান্তিতে এই আন্দোলন হচ্ছে। ওরা স্বচ্ছ ভারতের কথা বলছে। আর নিজেরা মিথ্যা কথা বলছে। চিরকাল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে রাখা যায় না।” বৃহস্পতিবার রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত NRC-CAA বিরোধী পদযাত্রার পর এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এটা ছিল শহরের বুকে মমতার NRC-CAA বিরোধী পঞ্চম পদযাত্রা। তাঁর দাবি, “যতদিন যাচ্ছে মিছিলে ভিড় বাড়ছে। তার মানে মানুষ NRC-CAA মেনে নিচ্ছে না। এই আন্দোলন আমরা সর্বপ্রথম বাংলা থেকে শুরু করেছিলাম, এখন গোটা দেশ সেটা করছে। আমরা গর্বিত।”

এরপরই বিজেপিকে একহাত নিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “১৪৪ ধারা থাকলেও ৪ জন যাওয়া যায়। আমি তাই আইন মেনে চারজনকে উত্তর প্রদেশে পাঠিয়েছিলাম। ওরা আহতের দেখতে হাসপাতালে যেত। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতো। কিন্তু তাঁদের লখনউ বিমানবন্দরের বাইরে বেরোতে দেওয়া হলো না। কিন্তু বিজেপির বাবুরা রোজ এ রাজ্যে আসছেন। ফুকচা খাচ্ছেন। নলেনগুরের সন্দেশ খাচ্ছেন। রসগোল্লার খাচ্ছেন। আর বাংলাকে গালাগাল দিয়ে চলে যাচ্ছেন লাট সাহেবরা।”

এদিন NPR প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি NPR বন্ধ করেছি। প্রথমে বুঝতে পারিনি এটা এতো ভয়ঙ্কর। বাবা-মায়ের জন্মদিন, জন্মস্থান জানতে চাইছে। আমি তো নিজেই বলতে পারবো না। অনেকেই বলতে পারবে না।”

ফের আধার কার্ড নিয়ে অমিত শাহকে কটাক্ষ করে বলেন, “লজ্জা নেই, 6 হাজার কোটি টাকা খরচ করে আধার কার্ড বানিয়েছে। এখন বলছে চলবে না। ওদের মাদুলি চলবে। সবাইকে তাড়িয়ে ওরা দিল্লির লাড্ডু খাবে। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। যত দুর্নীতিগ্রস্ত ওখানে যাচ্ছে, আর ওয়াশিং মেশিনে ধুয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। বিজেপি করলে পেলে, আর না করলে জেলে। NRC আতঙ্কে একের পর এক মানুষ মারা যাচ্ছে। যারা দেশের জন্য কৃষক, দেশের জন্য শ্রমিক তাঁদের উপর অত্যাচার করছে। গরিব লোককে তাড়াবে? গরিব মানুষ কাজ করবে, নাকি লাইনে দাঁড়াবে। গরিবের উপর এদের যত অত্যাচার।”

এখানেই থামেননি মুখমন্ত্রী। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই লড়াই মানুষের লড়াই। মানবিকতার লড়াই। এটা শুধু মুসলমানের লড়াই নয়। এটা সকলের লড়াই। চার্চের ফাদার তো মুসলিম নয়, তিনিও তো আন্দোলন করছেন। গোটা বিশ্বে সব সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে থাকে।”

সকলকে ফের একবার সতর্ক করে মমতা বলেন, “নজর রাখবেন কেউ নকল পোশাক পরে কেউ যেন ভাগাভাগি না করতে পারে। দাঙ্গা না বাঁধায়। দাঙ্গা বাঁধালে সব সম্প্রদায়ের মা-বোনের এক হয়ে আটকাবেন। এলাকা এলাকায় ছোট ছোট পোস্টার করুন। আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে দেব না। এলাকায় যত ধর্মগুরু আছে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করুন।”

এদিন তৃণমূল নেত্রী তাঁর পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ২৮ ডিসেম্বর ২৯৪টি কেন্দ্রে ধর্ণা হবে। ২৯ তারিখ ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেরনের শপথ অনুষ্ঠানে যাবেন তিনি। সেখান থেকে ফিরে ৩০ তারিখ পুরুলিয়ায় পদযাত্রা করবেন। আর নতুন বছরের ৩ তারিখ শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত হবে তার NRC-CAA বিরোধী মিছিল।

Previous articleখ্রিস্টমাসে স্পেশাল মানুষকে শুভেচ্ছা নুসরতের, কে তিনি জানেন?
Next articleউৎসবের রাতে নিয়ম ভেঙে জালে অভিযুক্তরা, অস্ত্র সহ গ্রেফতার এক