কাল ময়দানে দুই ভাইয়ের লড়াই, জিতবেন কে!

এই লড়াই দুই ভাইয়ের। এর আগেও দু’জন লড়েছিলেন। সেটা বছর তিনেক আগের কথা। বেঙ্গল ওলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে সম্মুখ সমর হয়েছিল দুই ভাইয়ের। সাগ্রহে ময়দান তাকিয়ে দেখেছিল সেই লড়াই। সেবার বড়দাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন ছোট ভাই।

এবার লড়াই ফুটবল ময়দানে। বড় ভাই অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও ছোট ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমজন মুখ্যমন্ত্রীর দাদা, এবং দ্বিতীয়জন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই। কিন্তু প্রশ্ন হলো ভাইয়ে-ভাইয়ে লড়াইটা লড়তে হচ্ছে কেন? জানতে হলে ঢুকতে হবে আইএফএ-র অন্দরে।

আইএফএ এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিচের ডিভিসন অর্থাৎ পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় ডিভিসনগুলি বয়সভিত্তিক করে দেওয়া হবে। যেমন পঞ্চম ডিভিশন বি গ্রুপ অনূর্ধ্ব ১৬, পঞ্চম ডিভিশন এ গ্রুপ অনূর্ধ্ব ১৭, চতুর্থ অনূর্ধ্ব ১৮, তৃতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ এবং দ্বিতীয় ডিভিসন খেলবে অনূর্ধ্ব ২০ ফুটবলাররা। তৃতীয় ডিভিসন পর্যন্ত দলগুলি নিয়ে আলোচনা হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় ডিভিসন নিয়ে আলোচনার জন্য কাল, শনিবার, ৪ জানুয়ারি সভা ডাকা হয়েছে। এই সভার আগেই দ্বিতীয় ডিভিসনের দু’টি দল আইএফএ-র এই বয়স ভিত্তিক ডিভিসন তৈরি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। একটি ক্লাব কালীঘাট স্পোর্টস লাভার্স অ্যাসোসিয়েশন, যার প্রধান কর্তা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য ক্লাবটি সুরুচি সংঘ, যার কর্তা স্বরূপ বিশ্বাস, যিনি ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই। দুই কর্তাই বোমা ফাটানোর ভঙ্গিতে বলেছেন, তাঁরা এই বয়সভিত্তিক ডিভিশন মানছেন না, মানবেন না। আর ঘিয়ে আগুন ঢালার কাজটি করেছেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়েছেন, বাংলার ফুটবলের উন্নতির জন্য আমরা কোনও বাধাই মানব না। আমাদের কাজে বাধা দেওয়া মোটেই সহ্য করব না। অন্যান্য ডিভিসনের মতো দ্বিতীয় ডিভিসনও বয়সভিত্তিক হবে। পাল্টা স্বপন গোষ্ঠীর সাফ কথা, মুষ্টিমেয় কয়েকজন নিজেদের স্বার্থের জন্য এসব পদ্ধতি চালু করতে চাইছেন। এতে বাংলার ফুটবলের উন্নতি তো দূরে থাক, মাঠের বহু প্রতিভা অকালে হারিয়ে যাবে।

দুই ভাইয়ের এই নাছোড় লড়াইয়ে চিড়েচ্যাপ্টা আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি সামাল দিতে আর আশ্বস্ত করার চেষ্টায় রয়েছেন। বলেছেন, আমরা কোনও কিছুই চাপিয়ে দেব না। সব সিদ্ধান্ত আলোচনা করে নিই। তৃতীয় ডিভিসন পর্যন্ত সেটাই হয়েছে। দ্বিতীয় ডিভিসনের অধিকাংশ ক্লাব না চাইলে আমরা তা বন্ধ রাখব। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, তিনটি ডিভিসন বয়স ভিত্তিক, আর দ্বিতীয় ডিভিসনে এসে তা আটকে গেলে সমস্যা বাড়বে বই তো কমবে না। তাহলে? ভাইয়ে-ভাইয়ে লড়াই থামবে না বাড়বে? সমস্যা মিটবে না বাড়বে? ময়দানে কান পাতলেই শনিবারের সভা নিয়ে গুঞ্জন। জিতবে কোন ভাই?

Previous articleনায়িকার ছেঁড়া পোশাকেই নাটকের নির্মাণ-বিনির্মাণ, কুণাল ঘোষের কলম।
Next articleউচ্চ মাধ্যমিক: হোয়াটস অ্যাপে প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে এবার প্রতিটি রুমে ৪জন পর্যবেক্ষক