সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই ‘আমফান’ মোকাবিলায় তৎপর প্রশাসন

এক রামে রক্ষা নেই, সুগ্রীব দোসর ৷

একদিকে ‘আমফান’, অন্যদিকে ‘সোশ্যাল-ডিসট্যান্সিং’ !
কীভাবে সম্ভব, সেই পথ খুঁজছে প্রশাসন ৷

করোনা -আবহে রাজ্যে আমফান আতঙ্ক।সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিপর্যয় মোকাবিলা করাই এখন বড় পরীক্ষা৷

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস বলছে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। তার সঙ্গে থাকবে ঝড়ের ঝাপ্টা। সমুদ্রও উত্তাল হবে। জোয়ারের সময় ঘূর্ণিঝড় ঢুকলে নদী বা সমুদ্র বাঁধের উপর চাপ তৈরি হতে পারে৷ ইতিমধ্যেই কাজে নেমে পড়েছে প্রশাসন৷ নিচু এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে৷ মাইকে প্রচার চলছে৷ দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও কলকাতার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ এবং দুর্যোগ মোকাবিলার ফাঁক গলে যাতে করোনা সংক্রমণ আচমকা না বৃদ্ধি পায়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর রাখছে সরকার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে কথা হয়েছে। মুখ্যসচিব বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রাজ্যে এই মুহূর্তে মৎস্যজীবীদের সমুদ্র যাওয়া এমনিতেই নিষিদ্ধ। তা-ও নজর রাখা হচ্ছে। যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ফ্লাড সেন্টারের পাশাপাশি স্কুল, কলেজেও মানুষজনকে রাখার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সামাজিক দূরত্ব ঠিকঠাক ভাবে মানা যায়।”

সমস্যা একটাই, ঘূর্ণিঝড় তীব্র আঘাত হানলে, সব ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নাও হতে পারে৷ পরিস্থিতি তেমন হলে, উপকূল এলাকার বাসিন্দাদের স্থানীয় ফ্লাডসেন্টার ও স্কুলগুলিতে তুলে আনা হবে। এ সব জায়গায়
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অনেকটাই সমস্যাজনক৷ তবু চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ ঝড়ের কারনে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ না বেড়ে যায়, তার জন্য আগেভাগেই সতর্ক রাজ্য। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সতর্কতা যাতে মানা হয়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ আসার আগে সমুদ্র ও নদী উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের আনা ও এলাকাভিত্তিক তাদের সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কী ভাবে, কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলছে৷ খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রশাসনের তরফে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা রাখা হবে। মজুত করা হচ্ছে পর্যাপ্ত ত্রাণও। শনিবার বিকেল থেকে সুন্দরবনে সমস্ত ফেরিঘাট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আজ, রবিবার বসিরহাট মহকুমায় পৌঁছে যাবে NDRF-এর দল। ঝড় মোকাবিলায় NDRF টিমকে তৈরি রাখার পাশাপাশি তৈরি থাকতে বলা হয়েছে রাজ্যের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিমকে। করোনার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় চলে আসায় পরিস্থিতি মোকাবিলা কঠিন হবে বলে মনে করছে প্রশাসন৷

Previous articleপরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র
Next articleপড়ুয়াদের অনলাইন পড়াশুনোর সুবিধার দিকে বিশেষ নজর