নেইমার-মারিয়া যুগলবন্দিতে ইতিহাস রচনা করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পিএসজি

করোনা আবহে মেসি-রোনাল্ডোরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে থেকে আগেভাগে বিদায় নেওয়ার পর সকলের চোখ ছিল নেইমারের উপর। মেসি-রোনাল্ডো না পারলেও,তিনি পারলেন। তৈরি হলো ইতিহাস। ক্লাবের ৫০ তম জন্মদিনে
আর্জেন্টাইন-ব্রাজিলিয়ান রথে চড়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেল প্যারিস সাঁ জাঁ বা পিএসজি। পর্তুগালের লিসবনে লাইপজিগকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের ছাড়পত্র আদায় করে নিলো ফরাসি জায়ান্টরা।

ম্যাচের শুরুতে একটু যেন বেশিই সতর্কও ছিল পিএসজি। আগের দুই রাউন্ডে টটেনহাম ও অ্যাটলেটিকোর মতো দলকে ছিটকে দিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা জায়ান্ট কিলার লাইপজিগকে একটু বুঝে নিতে চাইছিল তারা! সেই বোঝাশোনার কাজটা শেষ করে ৬ মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় পিএসজি। বলে প্রথম স্পর্শেই গোল পেতে পারতেন নেইমার। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ডান পায়ে টাচে জালে পাঠাতে চেয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। কিন্তু ডান পোস্টে লেগে বল চলে যায় বাইরে। পরের মিনিটে নেইমারের পাসে এমবাপ্পে বল জালে পাঠালেও গোল দেননি রেফারি। কারণ, আগেই বল হাতে লেগেছিল নেইমারের! ১০ মিনিটের মধ্যেই সুযোগ পেয়েছিলেন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াও। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য পিএসজি কাঙ্খিত প্রথম গোলটি পেয়েছে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল কম্বিনেশনেই। বক্সের বাইরে দলকে ফ্রি-কিক এনে দেন নেইমার। ১৩ মিনিটে ডি মারিয়ার নেওয়া ফ্রি-কিকে দুর্দান্ত এক হেডে ১-০ করেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কিনিয়োস। নেইমারের পাস থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে আতালান্তার বিপক্ষে পিএসজিকে সমতাসূচক গোলটি এনে দিয়েছিলেন তিনিই।

১৩ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করে পিএসজি। এবারের গোলটিও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার কম্বিনেশনে। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ডি মারিয়াকে লক্ষ্য করে দুর্দান্ত এক ব্যাক-হিল ফ্লিক করেন নেইমার। ডি মারিয়াও ঠান্ডা মাথার নিখুঁত ফিনিশিংয়ে বল পাঠান জালে। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় পিএসজি।

দুই গোলে পিছিয়ে থাকলেও বিরতি থেকে লাইপজিগ ফেরে সেই ভয়ডরহীন ফুটবলের মন্ত্র নিয়েই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বেশ কয়েকবারই তারা ত্রাসের সঞ্চার করে পিএসজি’র রক্ষণে। তবে ৫৫ মিনিটে ম্যাচের গতির বিপরীতে ফের গোল খেয়ে যায় লাইপজিগই। এবার গোলটির সঙ্গে আর্জেন্টাইন ডি মারিয়া থাকলেও ছিলেন না কোনেও ব্রাজিলিয়ান। ডি মারিয়ার ক্রসে হেড থেকে গোলটি করেছেন জুয়ান বেরনাত। নেইমার অবশ্য শেষে গিয়ে পায়ের টোকা দিয়েছিলেন বলে। কিন্তু লাইপজিগের খেলোয়াড়দের অফসাইডের দাবির মুখে গোল হয়েছে কি না, রেফারি তা পরীক্ষা করতে যাওয়ায় এটাও পরিষ্কার হয়েছে যে গোলটি স্প্যানিশ উইঙ্গার বেরনাতেরই।

৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়লেও থমকে যায়নি লাইপজিগ। ক্রমাগত আক্রমণ করে গেছে তারা।ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল পিএসজিও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেইমার-এমবাপ্পেরা তা করতে পারেননি। কিন্তু ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠে রূপকথার গল্প রচনা করলেন তাঁরা।

Previous articleরাজ্যে প্রথম: প্লাজমা দান করলেন CISF জওয়ানরা
Next articleবিশ্বভারতীর অশান্তি: পদ্মশ্রীপ্রাপক ১ টাকার চিকিৎসকের মূর্তিতে কালি!