ভাতেভাত হোক বা ঝোল ভাত। আলু লাগবেই। কিন্তু সেই আলুই মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। চন্দ্রমুখী ৩৫ টাকা কিলো। জ্যোতি কোথাও ২৮ কোথাও ৩০। সেই জায়গায় ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে কাটা আলু। সিঙ্গুরের বাজার ও ফুটপাথে এখন কাটা আলু নিয়ে বসছেন লকডাউনে কাজ হারানো লোকজন। ৩৫ টাকার আলুতে হাত ছোঁয়াতে না পেরে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত তাই ঝাল, ঝোল, ভাতেভাতের জন্য খোঁজ করছে সেই কাটা আলুরই।
কেন এই আকাল? কেউ কেউ বলছেন বর্ষায় সবজি নষ্ট, লকডাউনে পরিবহণ খরচ বাড়ার প্রভাব পড়ছে আলু থেকে সমস্ত জিনিসেই।তার জেরেই ভাতের পাতে মাস্ট আলুই ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে।
কাটা আলু কোথা থেকে আসছে?
আরও পড়ুন : কঙ্গনাকে নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ মহুয়ার
হিমঘর থেকে বের হওয়া আলুর বস্তা আসছে রতনপুর আলুর পাইকারি আড়তে। সেখান থেকে বাছাই করে ভালো আলু বস্তাবন্দি হয়ে চলে যাচ্ছে খুচরো বাজারে। আর দাগি, পচা আলু বস্তা করে এনে একশ্রেণির লোক বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। আলুর পচে যাওয়া অংশ বাদ তাঁরাই কাটা আলু বাজারে বিক্রি করছেন। আড়ত থেকে এই কাটা দাগি আলুর বস্তার দাম পড়ছে ১০৫০ টাকা। এক বস্তা আলু মানে ৫০ কেজি। সেই আলুই কেজি প্রতি কখনও ১৫ কখনও ২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন : অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ইলিশ বেশি, মাছের কেজি মাত্র ২৫০ টাকা
ভালো আলু কোথাও ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, কোথাও আবার ৩০ টাকায়। দামে পোষাতে না পেয়ে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত রাস্তার ধারে ভিড় করছে কাটা আলু কিনতে। কাটা আলু কেন কিনছেন, এক ক্রেতাকে জিজ্ঞেস করতেই তাঁর উত্তর, করোনা পরিস্থিতিতে রুজি-রুটিতে টান পড়েছে। আয় নেই। কম টাকায় সংসার চালাতে সস্তার কাটা আলুই ভরসা।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করতে বলছেন ব্যবসায়ীদের।তবে সেই টাকাও বর্তমান পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্তের জন্য বেশি বলছেন সিঙ্গুরের বাসিন্দা অভিজিত্ কোলে।
আর বিক্রেতারাও জানাচ্ছেন, লকডাউনে যে সমস্ত ছোটখাটো কাজ করে আয় হত সেসবই বন্ধ। পেট চালাতে হবে তো। পুঁজিও নেই। তাই সস্তায় কাটা আলু কিনে বিক্রি করছেন। বিক্রিবাট্টা কেমন হচ্ছে, জিজ্ঞাসা করতে উত্তর, সব লোকেরই রোজগারে টান। গরিবের ভরসা এখন কাটা আলুই।