বিজেপির অন্দরে পুরনো-নতুন সংঘাত, আঁচ পেলেন দিলীপ-লকেট

পুরনো ও নতুন কর্মীদের সংঘাত এবার বিজেপির অন্দরমহলে। দলবদলের হাওয়ায় যে নেতা-কর্মীরা বিরোধী শিবির থেকে তাদের দলে এসেছিলেন, তাঁদের ‘সম্মান’ দিতে পদ দিয়েছে গেরুয়া শিবির। আর তাতেই অসন্তোষ দানা বেঁধেছে অন্দরে। যার আঁচ পেলেন রাজ্য বিজেপির দুই শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্ব- দিলীপ ঘোষ ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা নেতাকে দেওয়া হয়েছে মণ্ডল সভাপতির পদ। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং হুগলির দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নাগালের মধ্যে পেয়ে কর্মীদের একাংশ উগরে দিলেন সেই ক্ষোভ।

বুধবার ধনেখালির মদনমোহনতলায় সভা ছিল বিজেপির। বিধি উপেক্ষা করে ভিড়ও হয়। তা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই নেতা-নেত্রী।

কিন্তু সভা শেষে সন্ধে ৬টা নাগাদ কলকাতা ফেরার পথে তাঁদের গাড়ি মহেশ্বরপুর পৌঁছতেই অন্য ছবি। পথ আটকে দাঁড়ান বিজেপির কয়েকশো কর্মী। অভিযোগ, দল যাঁকে ধনেখালি ও সমসপুরের মণ্ডল সভাপতি করেছে, সেই অজয় কৌলে তৃণমূলে থাকাকালীন তাঁদের উপরে ‘অত্যাচার’ চালাতেন। অজয়কে পদ থেকে সরানোর দাবিও তোলেন বিজেপি কর্মীরা। বিক্ষোভের জেরে নেতৃত্বের গাড়ি আটকে ছিল প্রায় আধ ঘণ্টা। বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়ে ছাড়া পান দিলীপ-লকেট।

তবে দলের অন্দরের এই ক্ষোভ ঢাকতে মরিয়া বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। দলের হুগলি জেলা সাংগঠনিক সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা বিজেপির কেউ নন। বিজেপির বদনাম করতে তৃণমূল লোক পাঠিয়েছিল। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে ধনেখালির তৃণমূল বিধায়ক অসীমা পাত্রের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, তৃণমূলের দুজন কর্মীর নাম বলতে বলুক যাঁরা ওই বিক্ষোভে ছিলেন। রাজ্য জুড়ে বিজেপিতে গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। সেই দায় বিজেপি তাঁদের উপরে চাপাতে চাইছে বলে অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের। এমনকী বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের মতেও বিড়ম্বনা এড়াতেই তৃণমূলের উপর দোষ চাপাতে চাইছেন গৌতম চট্টোপাধ্যায়।

বিজেপি সূত্রের খবর, অজয়ের বিরুদ্ধে কর্মীদের একাংশের কেন এত ক্ষোভ, তা জানতে চান দিলীপ-লকেট। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় এ নিয়ে আলোচনার জন্য দলের জেলা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল কয়েকজন মণ্ডল সভাপতিকে। দলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলে থাকাকালীন অজয় বিজেপি কর্মীদের উপরে অত্যাচার করতেন। বিজেপি-তে ঢুকে দলের পুরনো কর্মীদের পদ থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। তৃণমূল থেকে আসা ঘনিষ্ঠদের বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দিচ্ছেন। যদিও অজয়ের দাবি, তিনি ২০১৪ থেকে বিজেপি করছেন। লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য লড়াই করেছেন। তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে দলে এত ক্ষোভ কেন? এর উত্তরে অজয় বলেন, ধনেখালির মানুষ শেষ কথা বলবেন। যাবে পুরনো- নব্যের সংঘাতে বিজেপির অন্দরেও যে এবার ক্ষোভের আঁচ তা স্পষ্ট হচ্ছে।

আরও পড়ুন- ভোট আসছে, বুথ-স্তরের কমিটি তৈরির নির্দেশ সিপিএমের

Previous articleরবিবারের NEET পরীক্ষা সুরক্ষিত ও নিশ্চিত করতে রাজ্যের একাধিক পদক্ষেপ
Next articleহঠাৎ পরীক্ষার আগে দেশজুড়ে পরীক্ষা কেন্দ্র বদল নিটের