দুই আদিবাসী কন্যা ও এক মেধাবী ছাত্রীকে আর্থিক সাহায্য করে ‘দেবদূত’ তৃণমূল-সাংসদ

অসহায় মানুষের ত্রাতা বলিউডে সোনু সুদ হলেও বাংলায় ঘাটালের সাংসদ-অভিনেতা দেব। প্রতিনিয়ত মানুষের সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। এবার একসঙ্গে তিন জনকে সাহায্য করলেন অভিনেতা।

বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। উচ্চশিক্ষিত করে ডাক্তার কিংবা করতে চেয়েছিলেন মেয়েকে। কিন্তু তা আর হল কোথায়। বছর দশেক আগে বাবা অসুস্থ হওয়ার পর পা কেটে বাদ দিতে হয়। তারপর দীর্ঘদিন বাড়িতে। মা বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। বাড়িতে চারজনের সংসার খুব কষ্টে দিন কাটে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ব্লকের ময়নাডাল গ্রামের জয়শ্রী রানার। মাধ্যমিক দেওয়ার পর সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল জয়শ্রী। গ্রামে টিউশনি পড়ো বাবা মা ও ভাইয়ের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করেছিল সে। বাবার ওষুধের খরচ এবং ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ নিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের কলেজের পড়াশোনা খরচ বহন করার পরিস্থিতি ছিল না তাঁর। বাংলায় অনার্স নিয়ে পাঁশকুড়া কলেজে ফর্ম ফিল আপ করে সে। অ্যাডমিশনও হয়ে যায়। কিন্তু নিজের খরচ চালাবে কী করে তাই নিয়ে চিন্তিত ছিল সে। এরপরই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী অনামিকা ব্যানার্জির সঙ্গে যোগাযোগ। এরপর সেখানকার প্রতিনিধিরা ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ও বিষয়টি জানতে পেরে জয়শ্রীর পাঁশকুড়া কলেজে অ্যাডমিশন ফি দিয়ে ওই ছাত্রীকে ভর্তি করেন অভিনেতা। এরপর তাঁকে আশ্বস্ত করেন, পড়াশোনায় কোন রকম অসুবিধা হলে সাংসদ নিজেই দেখবেন। জয়শ্রীর মা ও বাবা বলেন, “আমরা খুব উপকৃত হলাম। আমাদের মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছিল। আমাদের দুশ্চিন্তা ছিল আমরা হয়তো আর আমাদের মেয়েকে পড়াতে পারবো না। সংসদ দীপক অধিকারী ‘দেবদূত’ হয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।” এখন খানিকটা আশার আলোই দেখছেন জয়শ্রী ও তাঁর পরিবার।

আরও পড়ুন- অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া নির্দিষ্ট করে দিতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে একজন বড় মাপের ডাবলুবিসিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দুই আদিবাসী কন্যার। ঘাটালের পান্না গ্রামে থাকেন তাঁরা। অভাবের সংসারে খরচ আসবে কোথা থেকে তা নিয়ে একরকম চিন্তাই ছিল তাঁদের। আর ভাইরাস সংক্রমণের জন্য বন্ধ কলেজ। একমাত্র ভরসা অনলাইন ক্লাস। কিন্তু তার জন্য তাদের কাছে নেই ফোন বা ল্যাপটপ। প্রতিনিধি মারফত এই কথা সাংসদ-অভিনেতা দেবের কানে পৌঁছতেই আর্থিক সাহায্য ও ল্যাপটপ দিয়েছেন তিনি। সাংসদ দীপক অধিকারীর হয়ে ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল রিনা ও বিনা নায়েকের হাতে ল্যাপটপ তুলে দিয়েছেন। ল্যাপটপ ছাড়াও এক বোনকে পড়াশোনার খরচ বাবদ ৩৫০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য করেছেন তৃণমূল সাংসদ। এর আগে জুন মাসেই মহকুমাশাসক নিজের পারিশ্রমিক থেকে ওই দুই বোনকে ২৫০০০ টাকাও দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- লঙ্কার ঝাঁঝের পরে আমের রস: জালিয়াতি চক্রে নাজেহাল রেলওয়ে

এর আগেও ঘাটালের এক মেধাবী ছাত্রকে কলেজে ভর্তির জন্য আর্থিক সাহায্য করেন অভিনেতা। জানা গিয়েছে, পান্না গ্রামের ওই দুই আদিবাসী কন্যা ছাড়াও পাঁশকুড়ার কেশাপাট এক অসহায় ছাত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সাংসদ। তাঁকে কলেজে ভর্তির জন্য আর্থিক সাহায্য করেছেন তিনি।

কিছুদিন আগেই এক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে সাহায্য করেন সাংসদ-অভিনেতা দেব। প্রসঙ্গত, পরিযায়ীদের ঘরে ফিরিয়েছিলেন সাংসদ। দুঃস্থদের খারাপ সময়েও বারবার তাদের পাশে থেকেছেন তিনি। বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাতও। কয়েকদিন আগে বেলঘরিয়ার এক বৃদ্ধ মাস্ক বিক্রেতাকে সাহায্য করেছিলেন। দেবের সাহায্য করার ফলেই যাদবপুরের করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। এখানেই শেষ নয়। সম্প্রতি টালিগঞ্জের এক করোনা আক্রান্ত পরিবারের আর্জিতে নিত্যসামগ্রীও পৌঁছে দিয়েছেন তাঁদের কাছে। প্লাজমার ব্যবস্থা করেছেন করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য। কিছুদিন আগেই নিজের সাংসদ দফতরকে আইসোলেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছেন দেব। সাংসদের ভালো কাজের দরুন আরও বেশি সংখ্যক মানুষ তাঁর কাছে আসছেন সাহায্যের জন্য।

আরও পড়ুন- কর ফাঁকির অভিযোগ এ আর রহমানের বিরুদ্ধে! মাদ্রাজ হাইকোর্টের নোটিশ গায়ককে

Previous articleকর ফাঁকির অভিযোগ এ আর রহমানের বিরুদ্ধে! মাদ্রাজ হাইকোর্টের নোটিশ গায়ককে
Next articleআদিবাসী দম্পতির মুণ্ডুহীন দেহ! হাড় হিম করা ঘটনায় চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায়