আদিবাসী দম্পতির মুণ্ডুহীন দেহ! হাড় হিম করা ঘটনায় চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায়

জোড়া খুন! মর্মান্তিক! নৃশংস! আদিবাসী দম্পতির হত্যাকাণ্ড ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন তানাসি গ্রামে! আজ, শুক্রবার সকালে বহু ডাকাডাকির পর যখন দরজা খুলছে না আদিবাসী দম্পতি, যখন কোনও সাড়া মিলছে না, তখন সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। গ্রামবাসীরা আরশা থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে। তারপর যে দৃশ্য চোখে পড়লো, তা হাড় হিম করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। ঘরের মধ্যে লুটিয়ে পড়ে আছে আদিবাসী দম্পতির মুণ্ডুহীন দেহ। মাথা উধাও! তাঁদের নাম পাতাই মাঝি (৬৫) এবং লেকাশি মাঝি (৫৫)। মৃতদেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ প্রথমে নিহত দম্পতির উধাও হওয়া মুণ্ডুর খোঁজ চালায়। যদিও শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত এখনও সেই দুই মুণ্ডু পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি খুনের ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতারও হয়নি।

হতদরিদ্র এই আদিবাসী দম্পতির সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না বলেই প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। প্রতিবেশীরাও হতবাক এই ভেবে যে, আপাত নিরীহ দম্পতির কেন এমন পরিণতি হলো? খুনের মোটিভ কী? রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এসে এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে দিয়ে গেল? পুলিশের দুঁদে অফিসারও ভেবে কুল পাচ্ছেন না! বড় কোনও শত্রুতা থেকেই এমন নৃশংস ঘটনা কেউ বা কারা ঘটাতে পারে। কিন্তু তারা কারা?

স্থানীয় সুত্রে খবর, নিহত আদিবাসী দম্পতির তিন ছেলে। দুই ছেলে আগেই মারা গিয়েছে। ছোট ছেলে মুকুন্দ মাঝি পাশের গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকে। মা-বাবা খুন হওয়ার খবর পেয়ে
ছুটে এসে ছেলেও বাকরুদ্ধ।

আরও পড়ুন- কর ফাঁকির অভিযোগ এ আর রহমানের বিরুদ্ধে! মাদ্রাজ হাইকোর্টের নোটিশ গায়ককে

এদিকে বিশেষ ব্রেক থ্রু না পেলেও খুনের মোটিভ জানতে ছেলে মুকুন্দ মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুটি তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। সেই লিড ধরেই ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে তদন্তকারীরা।

অতীতের দুটি ঘটনা। ছেলে মুকুন্দ-এর বয়ান অনুসারে, (এক) অনেক বছর আগে তাঁর মা-কে ডাইন-জুগিন বলত প্রতিবেশীরা। এই নিয়ে বচসাও হয়েছিল গ্রামবাদীদের সঙ্গে। তখন গরু বিক্রি করে জরিমানা দিতে হয়েছিল এই আদিবাসী দম্পতিকে। তারপর থেকে সেই ঘটনা নিয়ে দীর্ঘদিন আর কোনও সমস্যা হয়নি।

(দুই) সম্প্রতি জমি সংক্রান্ত এক বিবাদে গ্রামবাসীদের সঙ্গে ফের ঝামেলায় জড়ায় এই দম্পতি। কিন্তু তাও মিটে যায়। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল।

পুলিশ অবশ্য দুটি ঘটনাকে ধরেই তদন্তে এগোতে চাইছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় ঘটনা জমি বিবাদে জোর দেওয়া হচ্ছে। এদিকে মুন্ডু খুঁজে না পাওয়ায় পুলিশ মনে করছে আততায়ীর পালানোর সময় তা সঙ্গে নিয়ে যায় এবং দূরে কোথাও ফেলে দেয়। পুলিশের সন্দেহ খুনিরা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে।

আরও পড়ুন- দুই আদিবাসী কন্যা ও এক মেধাবী ছাত্রীকে আর্থিক সাহায্য করে ‘দেবদূত’ তৃণমূল-সাংসদ

Previous articleদুই আদিবাসী কন্যা ও এক মেধাবী ছাত্রীকে আর্থিক সাহায্য করে ‘দেবদূত’ তৃণমূল-সাংসদ
Next articleনীলাঞ্জনাই আজকের মহিলাদের অনুপ্রেরণা! “সাহসিনী”-কে কুর্নিশ মিমির