ঘর ছেড়েছিলেন স্বপ্নপূরণের জন্য, সরকারি অফিসার হয়ে ফিরলেন মিরাটের সঞ্জুরানি

স্বপ্নপূরণের জন্য আপনি কতদূর যেতে পারেন? ছাড়তে পারেন নিজের পরিবারকে? অক্লান্ত পরিশ্রমের মানসিকতা রাখেন! যদি  লক্ষ্য স্থির রেখে কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা রাখতে পারেন, তাহলে সেই স্বপ্ন আপনার পূরণ হবেই। চোখে আঙুল দিয়ে দেখালেন মিরাটের সঞ্জুরানি বর্মা। বিয়ের চাপে একসময় ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। জীবনে কিছু করতে চেয়েছিলেন। সাত বছর পর সেই পরিবারেই ফিরলেন তিনি মাথা উঁচু করে। একজন সরকারি আধিকারিক হয়ে।

সঞ্জুর জীবনটা হতেই পারত আর পাঁচটা সাধারণ গৃহবধূর মতো। কিন্তু স্বপ্নপূরণ করবেনই পণ করেছিলেন মিরাটের সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের এই তরুণী। থামেননি তাঁর স্বপ্ন সফল না হওয়া পর্যন্ত।পড়া ফেলে বিয়ে করবেন না বলে সাত বছর আগে ঘর ছেড়েছিলেন সঞ্জুরানি। আর এখন ইনকাম ট্যাক্স অফিসার। পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পাশ করে ভালো চাকরি করছেন। সাত বছর আগে যে পরিবার তাঁকে সমর্থন করেনি, এখন সেই পরিবারেরই হাল ধরতে চান সঞ্জু। স্বপ্ন দেখেন, ইউপিএসসি দিয়ে ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস জয়েন করার।

আরও খবর : যাত্রী হাতেগোনা, নিউ নর্মালে মাছি তাড়াচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো

মিরাটের মেয়ে সঞ্জুj জীবনটা ছিল আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের মতোই। পড়াশোনায় ভালো সঞ্জু বরাবরই স্বপ্ন দেখতেন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। বাড়ির বড় মেয়ে তিনি। ২০১৩  সালে হঠাৎ যখন তাঁর মা মারা গিয়েছিলেন তখন তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। পরিবারের সকলের চেয়ে ছিলেন, বাড়ির বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে। সঞ্জু তখন মিরাটের আরজে ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনার জন্য দিল্লিতে।২৮ বছরের সঞ্জুর মনে তখন বড় হওয়ার স্বপ্ন। আর এদিকে বাড়ি থেকে ক্রমাগত বিয়ের চাপ।

আপোস করেননি তিনি স্বপ্নের সঙ্গে। দিল্লিতে স্নাতকোত্তর করছেন। সঞ্জুর হাতে বিশেষ পয়সা ছিল না। কিন্তু লড়াই করার মানসিকতা যিনি রাখেন, যাঁর লক্ষ্য স্থির তাঁকে কে দমাবে।পরিবারের ক্রমাগত বিয়ের চাপে তিতিবিরক্ত সঞ্জু পড়াশোনাকেই বেছে নেন। পরিবার ছেড়ে নিজের আয়ের বন্দোবস্ত করেন। সঞ্জুর কথায়, “ ছোট ঘর ভাড়া নিয়ে থেকেছি। খরচ চালাতে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেছি। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের পড়িয়ে রোজগার করেছি”। একদিকে স্নাতকোত্তরের পড়া, অন্য দিকে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি চালিয়ে গিয়েছেন সঞ্জু। তারই ফলস্বরূপ পাবলিক সার্ভিস কমিশন দিয়ে সরকারি অফিসার হয়েছেন।
আর আজ যখন তিনি মাথা উঁচু করে হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, তখন পরিবারও বুঝেছে সঞ্জু সেদিন কতটা সঠিক ছিলেন। তবে এখনই দৌড় থামাতে চান না সঞ্জু। প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইউপিএসসি-র। তার স্বপ্ন আইএএস-হওয়ার। জেলাশাসক হয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

সঞ্জুরানির স্বপ্নপূরণের এই কাহিনি এখন অনুপ্রেরণা এ দেশের হাজার হাজার সঞ্জুর।

Previous articleশান্তি ফেরাতে বৈঠক, তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় উপস্থিত মহিলা প্রতিনিধিরাও
Next articleমহামারি পরিস্থিতিতে ছুটি নয়, কাজ শেষে ছাদনাতলায় হাজির ডেপুটি কমিশনার