বাংলাদেশে কোভিড-১৯এ মৃত্যু ছাড়াল ৫ হাজার

খায়রুল আলম (ঢাকা)

অতিমারি সংক্রমণে বাংলাদেশে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেল। দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ১৯৯ দিনের মাথায় এই মৃত্যুর সংখ্যা।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৭ জন।

গত এক দিনে আরও ১ হাজার ৫৫৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ১৭৮ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেবে বাড়িতে ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৭৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৬০ হাজার ৭৯০ জন হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তার ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।

প্রায় এক মাস পর ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল। তা ৫০০ ছাড়ায় গত ২৫ মে। এরপর ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। তা দেড় হাজার পেরিয়ে যায় ২২ জুন।

করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দু’হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর তা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই।

২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার অতিক্রম করে ১২ অগাস্ট পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ অগাস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার এবং তার ১৩ দিন পর ৭ সেপ্টেম্বর তা সাড়ে ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই তালিকায় আরও ৫০০ নাম যোগ হতে ১৫ দিন লাগল।
এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন লাখ পেরিয়েছিল গত ২৬ অগাস্ট। সোমবার তা সাড়ে তিন লাখে পৌঁছায়। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩ কোটি ১৩ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ লাখ ৬৫ হাজারে। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫তম স্থানে। তার মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশ রয়েছে ২৯তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১০২টি ল্যাবে ১৪ হাজার ১৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮৭টি নমুনা।

আরও পড়ুন- মোদি সরকারের পক্ষ নিয়ে রাজ্য সরকারকে বেনজির আক্রমণ রাজ্যপালের

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৯৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৪ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, নারী ১১ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০, ১ জন করে মোট ২ জন ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ও ১০ বছরের কম ছিল।

১৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৩ জন রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৫ হাজার ৭ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৮৯০ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ১১৭ জন নারী।

তাদের মধ্যে ২ হাজার ৫২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ৩৫৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৬৪৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২৯১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১১৭ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৪২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ২৩ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে ২ হাজার ৪৬৭ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৩৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩৩২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪২০ জন খুলনা বিভাগের, ১৮৫ জন বরিশাল বিভাগের, ২২২ জন সিলেট বিভাগের, ২৩৫ জন রংপুর বিভাগের এবং ১০৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

আরও পড়ুন- আইপিএল অভিষেকেই নজর কাড়লেন শ্রমিকের কাজ করা রবি বিষ্ণোই

Previous articleআইপিএল অভিষেকেই নজর কাড়লেন শ্রমিকের কাজ করা রবি বিষ্ণোই
Next articleপুজোয় বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে রাজ্য, প্রতিশ্রুতি বিদ্যুৎমন্ত্রীর