কুমোরটুলিকে দুর্গাপুজোয় কী উপহার দিল SHraCHI-সংবাদ প্রতিদিন! দেখুন

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। করোনা আবহের মধ্যেই ফের একটি দুর্গাপুজোর হাতছানি বাঙালির দোরগোড়ায়। আবার দুর্গাপুজো মানেই বাঙালির আদি ঐতিহ্যবাহী কুমোরটুলি। যেখানে মৃৎশিল্পীদের হাতে মৃন্ময়ী মায়ের চিন্ময়ী রূপ ফুটে ওঠে। শুধু কলকাতা-বাংলা নয়, দেশের গন্ডি পেয়িয়ে বাঙালির দুর্গাপুজো যেমন গোটা বিশ্বের দরবারে সমাদৃত, ঠিক একই ভাবে কুমোরটুলির মৃৎশিল্প ও শিল্পীদের হাতের কাজের দুনিয়া জুড়ে সুনাম। তাই তো করোনা মহামারি আবহের মধ্যেও কুমোরটুলির মা দুর্গা পাড়ি দিয়েছে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানিতেও।

যদিও কুমোরটুলির শিল্পীরা অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলিত। করোনা আবহে সেই দুর্দশা আরও সীমাহীন হয়েছে। গত মার্চ মাস থেকে একাধিক পুজোয় ঠাকুর তৈরির বরাত তাঁরা পাননি। শেষ বিশ্বকর্মা পুজোতেও সেভাবে আসেনি ঠাকুরের অর্ডার। তবে কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে দুর্গা পুজো। এবার প্রতিমা উচ্চতায় কিছুটা কম হলেও বরাত পেয়েছেন শিল্পীরা। জোরকদমে চলছে কাজ। তার মধ্যে ফের সুখবর কুমোরটুলির জন্য।

এবার মৃৎশিল্পীদের পাশে দাঁড়ালো বিখ্যাত SHraCHI গোষ্ঠী এবং সংবাদ প্রতিদিন। দুর্গাপুজোর আগে কুমোরটুলিকে শারদ উপহার দিলো এই দুই সংস্থা। যেখানে SHraCHI গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার অন্যতম কর্ণধার রবি টোডি এবং সংবাদ প্রতিদিনের পক্ষে ছিলেন সম্পাদক সৃঞ্জয় বসু।

পুজোর আগে মৃৎশিল্পীদের জন্য কী উপহারের ডালি তুলে দিলেন রবি টোডি-সৃঞ্জয় বসুরা? ৬টি বায়ো-টয়লেট, ১০টি শৌচাগারের সংস্কার, ২টি স্যানিটাইজেশন ট্যানেল ও একটি হ্যান্ডওয়াশিং ইউনিট। যা এক কথায় সময় উপযোগী উপহার বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আর খুব প্রাসঙ্গিকতার সঙ্গেই এই উপহারের নাম দেওয়া হয়েছে “নির্মল be শুদ্ধ কুমোরটুলি”!

উত্তর কলকাতার কুমোরটুলি এলাকা বেশ ঘিঞ্জি। শিল্পীদের টোলগুলি একেবারে গায়ে গায়ে। পাশাপাশি একাধিক বাড়ি রয়েছে। সরু রাস্তা। শৌচালয়ের দীর্ঘকালীন সমস্যা রয়েছে কুমোরটুলিতে। এই মহামারি আবহে যা বিপদ আরও বাড়াতে পারে।SHraCHI গোষ্ঠী এবং সংবাদ প্রতিদিন সেই দিকটা চিন্তা-ভাবনা করেই এমন উপহার তুলে দিলেন মৃৎশিল্পীদের কাছে।

SHraCHI গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার রবি টোডি বললেন, “কুমোরটুলি আমাদের গর্ব। বছরের পর বছর ধরে এখানকার শিল্পীরা আমাদের প্রিয় উৎসবের জন্য ঠাকুর তৈরি করে আসছেন। কিন্তু মহামারি আবহে এখানকার মৃৎশিল্পীরা জোর ধাক্কা খেয়েছেন। সেভাবে প্রতিমার বরাত পাচ্ছেন না। অনেকেই এখানে আসতে ভয় পাচ্ছে। এই শিল্পীদের স্বাস্থ্যের দিকটিও চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন। তাই কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা যাতে সুস্থ থাকেন, সুরক্ষিত থাকেন সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এই কাজ করেছি সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গে হাতমিলিয়ে। আমরা ৬টি শৌচাগার নির্মাণ করে দিয়েছি। ১০টি শৌচাগারের সংস্কার করেছি, এই মহামারি আবহে যাতে সকলে সুরক্ষিত থাকেন। এর আগেও আমরা কলকাতা পুরসভার সঙ্গে হাতমিলিয়ে এমন কাজ করেছি। আশা করব, এখানকার মানুষজন এই বায়ো-টয়লেটগুলি ব্যবহার করবেন এবং তার রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। পরবর্তী সময়ে যদি আবারও কোন সমস্যা হয় আমাদের জানালে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে।”

তাঁদের এই মহৎ উদ্যোগ সম্পর্কে সংবাদ প্রতিদিনের সম্পাদক সৃঞ্জয় বসু বলেন, “আমি নিজে অনেক পুজোর সঙ্গে যুক্ত। যাঁরা নিজেদের শিল্পের দ্বারা আমাদের এই উৎসবকে আনন্দমুখর করে তোলেন, সেই কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের প্রয়োজনীয় ন্যূনতম শৌচাগারটুকু নেই বলে আমরা জানতে পারি। ঠিক তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই মানুষগুলির পাশে দাঁড়ানোর। আমাদের সঙ্গে এই উদ্যোগে হাত মেলায় SHraCHI গোষ্ঠী। যারা বায়ো-টয়লেট বানায়। কুমোরটুলি আমাদের গর্ব, এখানকার মৃৎশিল্পীরা আমাদের সম্পদ। কুমোরটুলিতে লোক আসবে না, এখানে ঠাকুর তৈরি হবে না, এটা হতে পারে না। তাই আমরা ওদের জন্য বেশ কয়েকটি বায়ো-টয়লেট নির্মাণ করে দিয়েছি। বেশকিছু শৌচাগার সংস্কার করেছি। যাতে এখানকার মানুষ সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। আমাদের সঙ্গে আছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। যারা কুমোরটুলির শিল্পীদের নিয়ে আরও কিছু চিন্তাভাবনা করছে।”

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের যুগ্ম-সম্পাদক শাশ্বত বসু। এই মহৎ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “SHraCHI গোষ্ঠী ও সংবাদ প্রতিদিনকে এমন এক উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাই। এখানকার মৃৎশিল্পীদের জন্য যা অত্যন্ত দরকার ছিল।”

সব মিলিয়ে পুজোর আগে এমন উপহারে খুশির হাওয়া কুমোরটুলিতে।

আরও পড়ুন-“দেশকে হাসির খোরাক বানাচ্ছে মোদি সরকার”- টুইটে কটাক্ষ অভিষেকের

Previous articleস্বেচ্ছাবসরে বিহারের DGP গুপ্তেশ্বর পাণ্ডে, ভোটে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা
Next articleগ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা, সংসদে পাশ হলো ব্যাঙ্কিং সংশোধনী বিল