ভারত কেন নীতি নির্ধারণ কমিটিতে নয়? ৭৫ বর্ষপূর্তিতে রাষ্ট্রসংঘের কর্মপদ্ধতি বদলের ডাক মোদির

৭৫ বর্ষপূর্তি মানে শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতিচারণ নয়। বরং আত্মসমীক্ষার কথা মনে করিয়ে দেওয়া। আর শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ভার্চুয়াল ভাষণে সেই জরুরি কাজটাই করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মনে করিয়ে দিলেন, নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্রসংঘের সামনে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই রাষ্ট্রসংঘের কর্মপদ্ধতির পরিবর্তন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন। মোদির দাবি, পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হওয়া সত্ত্বেও ভারত এখনও কেন নীতি নির্ধারণ কমিটি থেকে দূরে? উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পদে ভারত যে ন্যায্য দাবিদার ফের সে কথাটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

নরেন্দ্র মোদি এদিন বলেন, ১৯৪৫ সালে রাষ্ট্রসংঘ যখন গঠন করা হয়েছিল, তখন বিশ্ব পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। সেই সময় যে সমস্যা বা চ্যালেঞ্জগুলি ছিল সেগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে অভিমুখ নির্দিষ্ট হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ব প্রেক্ষাপট বদলে গিয়েছে। চ্যালেঞ্জও নতুন ধরনের। কিন্তু তা যথাযথভাবে মোকাবিলা করার মানসিকতা কি রাষ্ট্রসংঘের আছে? ৭৫ বছরে এসে এই আত্মবিশ্লেষণটা দরকার। মোদির প্রশ্ন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু বদলালে এখানেই বা হবে না কেন? সময়ের দাবি মেনে সংস্কার করা না হলে প্রতিষ্ঠানই দুর্বল হবে। মোদি বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়নি ঠিকই, কিন্তু গৃহযুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী চেহারা আমরা দেখছি। এর ফলে বিশ্বের কত নিরীহ মানুষ, কত নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ যাচ্ছে তা কি আমরা দেখছি না? আমরা কি জানি না কত মানুষ এর ফলে গৃহহারা? এই অবস্থায় রাষ্ট্রসংঘের সংস্কার ও পরিবর্তন সময়ের দাবি। মোদি বলেন, গত ৮ থেকে ন’মাস ধরে বিশ্ব এক ভয়ঙ্কর মহামারির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে রাষ্ট্রসংঘ কি যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পেরেছে? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্র, বিশ্বের ১৮ শতাংশ মানুষ ও বহু ভাষাভাষীর দেশ ভারত এখনও কেন রাষ্ট্রসংঘের নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকবে? ১৩০ কোটির দেশকে কেন দূরে রাখা হবে, তার আত্মসমীক্ষা করুক রাষ্ট্রসংঘ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথায়, ভারতের নীতি বিশ্বশান্তির দর্শনের অভিমুখে পরিচালিত। ভারত যার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তার বিরুদ্ধে যায় না। জনকল্যাণকে জগৎকল্যাণের পথে পরিচালিত করা ভারতের নীতি। এই প্রসঙ্গে করোনা বিশ্ব মহামারিতে ভারতের ভূমিকা মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদি। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ভাষণে তিনি বলেছেন, মহামারির কঠিন সময়ে বিশ্বের ১৫০ টি দেশে ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি ওষুধ পাঠিয়ে সাহায্য করেছে। ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সরবরাহের ক্ষমতা গোটা বিশ্বকে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। দুনিয়ার বহু দেশ ভারতের উপর বিশ্বাস রেখেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। শান্তি, সুরক্ষা, সমৃদ্ধি, মানবতা ও মানবজাতির পক্ষে এবং সন্ত্রাস, মাদক, অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কাজ করছে ভারত। আমাদের মন্ত্র, রিফর্ম, পারফর্ম ও ট্র্যান্সফর্ম। রাষ্ট্রসংঘের মূল দর্শনের সঙ্গে একাত্ম ভারতও।

আরও পড়ুন- দ্বিশত জন্মবার্ষিকীতেই শুরু তাঁর নামাঙ্কিত অ্যাকাডেমির কাজ, হবে লাইব্রেরি ও মিউজিয়ামও

Previous articleকরণ জোহরের হাউস পার্টির ভিডিও প্রকাশ্যে, নিউজ চ্যানেলগুলিকে একহাত নিলেন জাভেদ আখতার
Next articleমোবাইলের সিম 4G তে পরিবর্তনের নামে প্রতারণা, ব্যাঙ্ক থেকে উধাও ১০ লক্ষ টাকা!