শীর্ষ আদালতে পৌঁছে গেলো হাথরাস-কাণ্ড, দায়ের হলো দু’টি তাৎপর্যপূর্ণ মামলা

হাথরাস কাণ্ড পৌঁছে গেলো দেশের শীর্ষ আদালতে৷

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ দু’টি জনস্বার্থ মামলা রুজু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে৷ জানা গিয়েছে, একটি মামলার শুনানি হতে পারে মঙ্গলবারই৷

আরও পড়ুন- ময়দানে তিন প্রধানের বৃত্ত সম্পূর্ণ, নয়া স্পনসর জার্সি নিয়ে ফিরছে মহামেডান

প্রথম মামলাটি করেছেন সঞ্জীব মালহোত্রা নামে এক আইনজীবী৷ তিনি হলফনামায় একাধিক দাবি করেছেন৷ বলেছেন,

◾ হাথরাসে ১৯ বছরের এক দলিত-কন্যাকে গণধর্ষন এবং পরে তাঁর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত হোক শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে৷ CBI বা SIT, যে সংস্থাই হাথরাস- কাণ্ডের তদন্ত করুক, সেই তদন্ত শীর্ষ আদালতের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে করতে হবে৷ শীর্ষ আদালত অথবা হাইকোর্টের কোনও কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে এই তদন্ত ‘মনিটর’ করার দায়িত্ব দিক শীর্ষ আদালত ৷

◾হাথরাস-কাণ্ডের তদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিচারপর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে সরিয়ে আনার নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট৷ এই দাবির কারন হিসাবে হলফনামায় বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশে এই মামলার বিচার সুষ্ঠভাবে হওয়ার পরিস্থিতি নেই৷ ওই রাজ্যের সরকার হাথরাসে ধর্ষণের কথাই অস্বীকার করেছে৷ এই মনোভাবেই স্পষ্ট হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের কোনও আদালতে এই মামলার নিরপেক্ষ বিচারের পরিবেশ নেই৷ রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ধর্ষণের ঘটনাই অস্বীকার করেছে৷ ফলে, এই মামলার বিচার উত্তরপ্রদেশে হলে, তা প্রহসনে পরিনত হবে৷

◾হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, ওই রাজ্যের পুলিশ জোর করে ধর্ষিতার দেহ জ্বালিয়ে দিয়েছে৷ এই ঘটনার সাফাই হিসাবে পুলিশ বলেছে, পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে, পরিবারের সম্মতিতেই দেহ পোড়ানো হয়েছে৷ অথচ প্রয়াত ধর্ষিতের পরিবার আলোচনার কথা অস্বীকার করে সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “সম্মতি নেওয়ার প্রশ্নই নেই৷ উল্টে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ তাদের হুমকি দিয়ে মরদেহ নিয়ে চলে যায় এবং জ্বালিয়ে দেয়৷ যে রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন এই ধর্ষণের ঘটনা অস্বীকার করছে, সেই রাজ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারেনা, বিচারও হতে পারেনা৷

মঙ্গলবার দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি রামসুব্রহ্মণ্যমের এজলাশে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা আছে৷

হাথরাস-কাণ্ড নিয়ে দ্বিতীয় মামলাটিও করেছেন শীর্ষ আদালতের আর এক আইনজীবী, সি আর জয়সুখি৷ তিনি সরাসরি সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিতে শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছেন৷ হলফনামায় ওই আইনজীবী বলেছেন, গত বেশ কয়েকমাস যাবৎ উত্তরপ্রদেশে খুন, জখম, রাহাজানি, ডাকাতি এবং ধর্ষণের ঘটনা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে৷ রাজ্যের শাসক দলের বিধায়করাও বেপরোয়াভাবে ধর্ষণ করছেন৷ এই সব ঘটনাতেই প্রমানিত হয়েছে, উত্তরপ্রদেশে আইনের শাসন বহাল রাখতে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ ৷ ওই রাজ্যের বাসিন্দারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন৷ রাজ্যবাসীর স্বার্থেই সুপ্রিম কোর্টের উচিত হস্তক্ষেপ করে উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতির শাসনজারি করার নির্দেশ জারি করুক৷ এই মামলার শুনানির দিন এখনও ধার্য হয়নি৷

প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশ সরকার হাথরাস-কাণ্ডের CBI তদন্তের সুপারিশ করলেও এখনও এ সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি৷

Previous articleব্রেকফাস্ট নিউজ
Next articleখারাপ দিন আসছে, প্রতি ১০ জনের ১ জন আক্রান্ত হবে, সতর্কবার্তা WHO-র