নেতাইতেও বেসুরো, কোন পথে যাচ্ছেন শুভেন্দু?

উল্টো সুর পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। কোভিড-মুক্ত হয়ে জেলায় ফিরে নেতাইয়ের সভায় দাঁড়িয়ে বললেন, জেলায় বেশ কিছু কাজ না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে। চেষ্টা করব ব্যক্তিগত উদ্যোগে তার সমাধান করতে।

রবিবার লালগড়ের নেতাইয়ে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কথা কেন বেসুরো ঠেকেছে? প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি জঙ্গলমহলের সভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, জঙ্গলমহলের সব কাজ হয়ে গিয়েছে। সেখানে শুভেন্দু বলছেন, মানুষের বেশ কিছু জিনিস না পাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে। তিনি তা মেটানোর চেষ্টা করবেন। দ্বিতীয়ত, শুভেন্দুর কথার মধ্যে কোথাও তৃণমূল কংগ্রেস কথা পাওয়া যায়নি। পুরোটাই ব্যক্তিগত, আমি, শুভেন্দু অধিকারীর কথা বলেছেন। বলেছেন, শুভেন্দু অধিকারী সেই ক্ষোভ মেটাবেন। তৃতীয়ত, সভায় তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা কার্যত চোখেই পড়েনি। চোখে পড়েছে অসংখ্য পোস্টার আর শুভেন্দু অধিকারীর ছবি। দলহীন জনসংযোগ! এবং চতুর্থত, তাঁর সভা পরিচালনা করলেন, লালগড় ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে অপসারিত নেতা তন্ময় রায়।
লক্ষ্যণীয় হলো, বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। তবে কবিতায় যা বলেছেন, বা বলতে চেয়েছেন, তা যথেষ্টই ইঙ্গিতবাহী। বলেছেন, ‘আমরা চলি সমুখ পানে, কে আমাদের বাঁধবে/ রইবে যারা পিছুর টানে, কাঁদবে তারা কাঁদবে।

শুভেন্দুর সভার বকলমে আয়োজক ছিল ‘নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটি।’ ২০১১ সালে ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ে নিহত ৯জনের প্রতি ফের শ্রদ্ধা জানিয়ে শুভেন্দু কী বললেন? বললেন,  এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। ৭ জানুয়ারি যখন এসেছিলাম, তখন দেখেছিলাম অনেকের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। জনপ্রতিনিধিদের থেকে সাহায্য না পাওয়ার কথা কানে এসেছিল। কতখানি সত্য-মিথ্যা জানি না। আমি যতটা পেরেছি চেষ্টা করেছি ক্ষোভ প্রশমনের।

তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কী কী করেছিলেন, তার হিসাবও দিয়েছেন। বলেছেন, ৮জনের মধ্যে ৩ জনের বয়স ৪০-এর বেশি হওয়ায় কিছু করতে পারিনি। বাকি ৫ জনের ছোটখাটো কাজের ব্যবস্থা করেছি। ৫২জন মা-দিদিকে সেলাই মেশিন দিয়েছি। সতীশ সামন্ত ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট থেকে ১৭জনকে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শুভেন্দু যখন এই কথা বলছেন তখন জেলা তৃণমূল মুখপাত্র সুব্রত সাহা কী বললেন? তাঁর সাফ কথা, জঙ্গলমহলে কতখানি উন্নতি হয়েছে, তা খালি চোখেই দেখা যায়। আর এই বিতর্কের মাঝে পড়তে না চেয়ে নীরবতার পথ নিয়েছেন ঝাড়্গ্রামের তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মু। জঙ্গলমহলের প্রতি শুভেন্দু তাঁর ভালবাসার কথা বলতে গিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেছেন। বলেছেন, যতদিন বাঁচব, ততদিন নেতাইয়ের সঙ্গে আছি। আমার কর্মপদ্ধতি আর দায়বদ্ধতা থেকে কেউ সরাতে পারেনি, পারবেও না।

প্রশ্ন, শুভেন্দুর কথায় তৃণমূল কোথায়?

আরও পড়ুন:কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী

Previous articleপ্রতিদিন রসুন কেন খাবেন? জেনে নিন কার্যকারিতা
Next articleফের করোনা বিপদের ভয় বাড়ছে ইতালিতে, চাপছে বিধিনিষেধ