জামিন মেলেনি, ১৪ দিনের জেল হাজতে অর্ণব গোস্বামী, আজ আর্জি হাইকোর্টে

ইনসেটে আত্মঘাতী অন্বয় নায়েক

বছরদুয়েক আগে, ২০১৮ সালে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার এক মামলায় অর্ণব গোস্বামীর জামিন মেলেনি। শুধু একটাই স্বস্তি, তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়নি। ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিবাগের আদালত।

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মতো গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগে গ্রেফতার করা অর্ণব গোস্বামীকে পুলিশি হেফাজতে না পাঠিয়ে কেন পাঠানো হলো জেল-হেফাজতে? একইসঙ্গে একই অভিযোগে ধৃত
ফিরোজ শেখ এবং নীতেশ সারদা’কেও আদালতে তোলা হয় এবং তাঁদেরও ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

জানা গিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার ধৃত অর্ণবের তরফে বম্বে হাইকোর্টে এক আবেদন দাখিল করা হয়েছে৷ এই আর্জিতে বলা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ করে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক৷ সম্ভবত আজ, বৃহস্পতিবার এই আর্জি শোনা হবে।

বুধবার সকালেই রিপাবলিক টিভির এডিটর-ইন-চিফ অর্ণবের বাড়িতে যায় মুম্বই পুলিশের একটি দল। তখনই আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

২০১৮ সালের মে’তে আত্মহত্যা করেছিলেন ৫৩ বছরের ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অন্বয় নায়েক এবং তাঁর মা কুমুদ নায়েক। আলিবাগে কবীর গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অন্বয়ের স্ত্রী অক্ষতা। তখনই একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাতে অভিযোগ করা হয়েছিল, অর্ণব গোস্বামী, ফিরোজ শেখ এবং নীতেশ সারদার থেকে ৫.৪ কোটি টাকা পেতেন অন্বয়। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। সেজন্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। পরে অর্ণব, ফিরোজ ও নীতিশের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। তবে ২০১৯ সালে সেই মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছিল, যে তিনজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে জোরালো কোনও প্রমাণ মেলেনি। পরে আলিবাগ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অন্বয়ের মেয়ে আদনিয়া। চলতি বছরের মে’তে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অন্বয় ও তাঁর মা’র মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু হবে।

সেই সুইসাইড নোট, যেখানে অর্ণবের নাম রয়েছে

বুধবার গ্রেফতারির পর দুপুরে অর্ণবকে আদালতে তোলা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করেছে। সেজন্য চোটও লেগেছে। আদালতের নির্দেশে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা ফের আদালতে তোলা হয়। পুলিশের তরফে অর্ণবকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছিল। তবে ম্যারাথন শুনানি শেষে রাত ১২টা পর আদালত পুলিশের সেই আর্জি খারিজ করে অর্ণবকে জেল হাজতে পাঠায়৷ এর মাঝে জামিন না পেলে আগামী ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে অর্ণবকে থাকতে হবে। একইসঙ্গে অপর দুই অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়। তাঁদেরও ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এদিকে, বুধবারের রাত পুলিশি হেফাজতে কাটাতে না হওয়ায় তাঁদের ‘বড় জয়’ বলে দাবি করেছেন অর্ণবের আইনজীবী গৌরব পারকের। ওদিকে অর্ণবের বিরুদ্ধে আরও একটি FIR দায়ের হয়েছে। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছেন অর্ণব। সেই FIR-এ অর্ণবের স্ত্রী’র নামও আছে।

আরও পড়ুন:অর্ণবকে যারা বাঁচানোর চেষ্টা করেছে তাদেরকেও ছাড়া হবে না, হুমকি শিবসেনার

Previous articleব্রেকফাস্ট নিউজ
Next articleshuvendu update : বিজেপিকে নতুন খোলা দোকানের ডাকাডাকি বলে কটাক্ষ শিশিরের