রামবিলাসের জায়গায় এবার কি সুশীল মোদি রাজ্যসভায়?

প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও লোকজনশক্তি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা রামবিলাস পাসোয়ানের শূন্য আসনে এবার কি বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদিকে রাজ্যসভায় পাঠাবে বিজেপি? এই সম্ভাবনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের শক্তিবৃদ্ধির পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার রাজ্যসভার ওই আসনে নিজেদের প্রার্থী দিতে পারে বিজেপি। বিহার ভোটে এনডিএর শরিকি বিবাদ এবং জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে চিরাগ পাসোয়ানের লাগাতার প্রচারের পর নীতীশ কুমারের ক্ষোভ প্রশমিত করতে এবার এলজেপিকে দেওয়া আসনটি তাদের হাত থেকে ফিরিয়ে নিতে চায় বিজেপি। পাশাপাশি এলজেপিতে রামবিলাস পাসোয়ানের মাপের আর কোনও নেতা নেই, যার জন্য বিজেপি রাজ্যসভার একটা আসন ছেড়ে দেবে। প্রয়াত রামবিলাসের পুত্র ও দলের বর্তমান প্রধান চিরাগ নিজে লোকসভার সাংসদ। এর উপর বিহার বিধানসভা ভোটেও এলজেপির পারফরম্যান্স জঘন্য। একগাদা আসনে প্রার্থী দিয়ে জেডিইউয়ের ভোট কেটে মহাজোটের সুবিধা করে দেওয়া ছাড়া তাদের নিজেদের প্রাপ্তি মাত্র একটি বিধানসভা আসনে জয়। ফলে বিধানসভার এক আসনের দলের জন্য রাজ্যসভার একটি আসন ছাড়া অযৌক্তিক বলে মনে করেন বিজেপি নেতারা। এর উপর বিহারে এবার নীতীশের নেতৃত্বাধীন এনডিএতে নেই চিরাগের দল। ফলে তাদের হাতে থাকা আসন নিয়ে নেওয়ার এটাই সুবর্ণ সুযোগ বিজেপির সামনে। এলজেপিকে কেন্দ্র করে বিজেপি-জেডিইউ সম্পর্কে যে বিশ্বাসহীনতা তৈরি হয়েছে, এই সিদ্ধান্তে তা কাটবে বলে আশা গেরুয়া শিবিরের। এই মওকায় এলজেপিকে সাইডলাইন করার সিদ্ধান্তে পুরোদস্তুর সায় আছে নীতীশের দলেরও। ফলে রামবিলাসের শূন্যস্থানে তাঁর স্ত্রী তথা চিরাগের মা রীনা পাসোয়ানের নাম ভেসে উঠলেও এলজেপি জানে তারা এই মুহূর্তে কোনওরকম দর কষাকষি করার জায়গায় নেই। বিজেপির সিদ্ধান্তই তাদের মানতে হবে।

বিহার থেকে রাজ্যসভায় জিততে ১২২ জন বিধায়কের সমর্থন দরকার। এনডিএ-এর হাতে আছে ১২৫ জন। এলজেপির একজন বিধায়ক সমর্থন না দিলেও চলবে। যদিও অনুমান, বিজেপি প্রার্থী দিলে চিরাগের দল কেন্দ্রে জোট টিকিয়ে রেখে প্রাসঙ্গিক থাকতে নিজেদের তাগিদেই রাজ্যসভায় সমর্থন করবে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর রাজ্যসভা আসনের উপনির্বাচন।

এবার বিধানসভা ভোটের পর বিহারের দীর্ঘদিনের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা পরিষদীয় দলের নেতা সুশীল মোদিকে কোনও দায়িত্ব দেয়নি বিজেপি। বিহারের রাজনীতিতে নীতীশের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত দীর্ঘদিনের এই প্রবীণ নেতাকে নিয়ে বিজেপির অন্য পরিকল্পনা আছে, তা শোনা গিয়েছিল তখনই। বলা হচ্ছে, রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সুশীল মোদির প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা দীর্ঘ। তা কাজে লাগাতে তাঁকে এবার নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও দফতর দেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিহারের রাজ্যসভা আসনটি থেকে তাঁকে জিতিয়ে আনলে সবদিক থেকেই সুবিধে। তবে সুশীল মোদির পাশাপাশি বিহারের নেতা ও জাতীয় মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন, ঋতুরাজ সিনহার নামও ভেসে উঠছে। যদিও পাল্লা ভারি সুশীল মোদির দিকেই।

 

Previous article২৫ নভেম্বর, বুধবারের বাজার দর
Next articleপ্রসঙ্গ-ধর্মঘট: এখনও জারি হয়নি রাজ্য সরকারি দফতরে হাজিরার নির্দেশিকা