এবার পাইপলাইনে ভারত থেকে আসবে জ্বালানি তেল; শুরু লাইনের কাজ

খায়রুল আলম, ঢাকা

অবশেষে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন স্থাপন কাজ শুরু হলো। বৃহস্পতিবার দুপুরে পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচণ্ডী ইউনিয়নের সোনাপুকুরে প্রকল্পের ট্যাপ অব পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানে কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান মো. আবু বকর ছিদ্দীক।

বিপিসির চেয়ারম্যান মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেন, ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পাইপলাইনের মাধ্যমে পার্বতীপুর রেলহেড ডিপোতে জ্বালানি তেল আসবে।
সময় লাগবে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এখান থেকে উত্তরের ১৬ জেলায় তেল সরবরাহ করা হবে।
পরিবহন ব্যয় ও সিস্টেমলস অনেক কমে যাবে। পার্বতীপুর রেলহেড ডিপোর বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার টন থেকে ৪৩ হাজার ৮০০ টনে উন্নীত করা হবে।

বর্তমানে আমদানি করা জ্বালানি তেল পার্বতীপুরে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রতি ব্যারেলে পরিবহন খরচ হয় তিন ডলারের মতো। সেই তেল চট্টগ্রামে শোধন করে সড়ক ও নৌপথে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় তেল পরিবহনে খরচ হয় ব্যারেলপ্রতি চার থেকে পাঁচ ডলার। ফলে পরিবহন ব্যয় দাঁড়ায় সব মিলিয়ে সাত থেকে আট ডলার। আর ভারত থেকে পাইপলাইনে পরিশোধিত তেল এনে দেশের উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করতে পরিবহন ব্যয় হবে সাড়ে পাঁচ ডলারের মতো।

ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের দৈর্ঘ্য হবে ১৩১.৫ কিলোমিটার। শিলিগুড়ি রেল টার্মিনাল থেকে ভারত অংশে পাঁচ কিলোমিটার ও বাংলাদেশ অংশে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্দা সীমান্ত দিয়ে নীলফামারী হয়ে পার্বতীপুর রেলহেড ডিপো পর্যন্ত ১২৬.১৫ কিলোমিটার। পাইপলাইনের ব্যাস হবে ১০ ইঞ্চি। প্রকল্পে ভারতীয় অর্থায়ন ৩৪৬ কোটি রুপি এবং বাংলাদেশের অর্থায়ন ৩০৬ কোটি ২৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে আড়াই বছর (জানুয়ারি ২০২০ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত)। কাজের মধ্যে রয়েছে ১৩১.৫ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ ও জমি অধিগ্রহণ, পার্বতীপুরে নতুন রিসিভ টার্মিনালের জন্য ছয়টি ট্যাঙ্ক নির্মাণ। প্রতিটির ট্যাঙ্কের ধারণক্ষমতা হবে চার হাজার ৮০০ টন। প্রকল্পের ট্যাপ অব পয়েন্ট পার্বতীপুরের সোনাপুকুর হতে সৈয়দপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত সাত কিলোমিটার আট ইঞ্চি ব্যাসের ভূগর্ভস্থ পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন নির্মাণ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অংশের পঞ্চগড় জেলায় ৮২.১৭ কিলোমিটার, দিনাজপুর জেলায় ৩৫.৫ কিলোমিটার এবং নীলফামারী জেলায় ৯ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। বিপিসির পক্ষে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এবং বাংলাদেশ অংশে প্রথম পর্যায়ের ৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কাজটি করছে ‘দিপন গ্যাস’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

২০১৮ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের পার্বতীপুর রেলহেড ডিপো ও ভারতের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনালে ‘ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

আরও পড়ুন- ভাসানচরে যেতে দলে দলে ক্যাম্প ছাড়ছেন রোহিঙ্গারা

Previous articleএকই দিনে রাজ্যের তিন বিশিষ্ট চিকিৎসকের প্রাণ কাড়ল নভেল করোনা ভাইরাস
Next article‘গুড বাই’ বলে প্রেমিকের আত্মহত্যা; তিন দিন পর মৃত্যু প্রেমিকারও