“জেলা সভাপতি হিসেবে এটাই আমার শেষ বক্তব্য”, জিতেন্দ্র তিওয়ারির ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা

বেসুরো গানের ঢল নেমেছে তৃণমূলে৷

আসানসোলের গ্রাফাইট কারখানার সামনে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের সভায় আসানসোল পুরসভার প্রশাসক তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি ( Jitendra Tewari) বললেন, ‘‘এটাই হয়তো জেলা সভাপতি হিসেবে আমার শেষ বক্তব্য। বিকেলের মধ্যেই যদি জেলা সভাপতির পদ ছাড়তে হয়, তবে আমার দু’মিনিট সময় লাগবে না। আমি ছেড়ে দেব।’’

ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পরিয়াল ( Biswanath Pariwal) জানালেন,‘‘দল নির্দেশ দিলে আজ সন্ধ্যার মধ্যেই আমি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে তৈরি৷’’

রাজনৈতিক মহলের ধারনা, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ( Firhad Hakim) সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে যাওয়ার কারনে জিতেন্দ্র তিওয়ারির হয়তো ধারনা হয়েছে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিতে পারে দল৷ সে কারনেই আগাম এই বার্তা দিয়ে রাখলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি৷

এদিন জিতেন্দ্র তিওয়ারি একথাও বলেছেন যে, “আপাতত তৃণমূলের কোনও সভা বা শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকে আমাকে যোগ দিতে নিষেধ করেছে দল”। জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ ছাড়তে তৈরি, তা জানিয়ে প্রকাশ্য সভাতেই ‌জিতেন্দ্র বলেছেন, ‘‘সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বললে চলে যাব। কিন্তু মানুষের সঙ্গেই থাকব।’’

ওদিকে একই মঞ্চে আরও ‘কঠিন’ কথা বলেছেন বিধায়ক বিশ্বনাথ পরিয়াল৷ তিনি বলেন, ‘‘সত্যিটা যদি সামনে চলে আসে, তা হলে তো ওদের মুশকিল৷ তাই সভা করতে দেওয়া যাবে না। জিতেন্দ্রকে আটকে রাখো! পিছন থেকে ধরে রাখো! আরে মশাই, কতদিন ধরে বেঁধে রাখবেন?” তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে পরিয়াল বলেন, “বেঁধে রাখতে গিয়ে আপনাদের অবস্থা কেমন হয়েছে জানেন? মূর্খ কালিদাসের মতো। যে ডালে বসে আছেন, সেই ডালই কাটছেন। এতে কার কার ক্ষতি হচ্ছে কি না জানি না। কিন্তু নেতাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। দল আছে। আপনারা আছেন। চেয়ারে আছেন। দল কালকে থাকবে না। আপনারাও থাকবেন না। আপনাদের মন্ত্রিত্বও থাকবে না। বিধায়ক পদও থাকবে না।’’

বিশ্বনাথ এদিন মমতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনি দলের রাশ টেনে ধরুন। তা না হলে দলকে বাঁচানো যাবে না। আপনার দলের নেতৃত্ব দলটাকে শেষ করতে চাইছেন। আপনার সঙ্গে থেকে আপনাকে পিছন থেকে মির‌জাফরের মতো ছুরি মারতে চাইছে।’’ একই সঙ্গে বিশ্বনাথ তৃণমূলনেত্রীর উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যেই বলেন, ‘‘আপনি বললে বুধবার সন্ধ্যায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেব। আমাদের কিছু প্রয়োজন নেই। আমরা আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারনা, বিক্ষুব্ধদের তালিকা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে৷

আরও পড়ুন- বিধায়ক পদে ইস্তফা শুভেন্দুর: কী মত রাজনৈতিক মহলের

Previous articleজিতেন্দ্রকে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী সময় দেওয়ার পরেই শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকে জিতেন্দ্র
Next articleতিন টেস্টে অধিনায়ক রাহানের ওপর ভরসা বিরাটের