বর্ষশেষে অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশের মাইনে কাটার নির্দেশ ঘিরে শোরগোল, খোঁজ নিচ্ছে নবান্ন, কিশোর সাহার কলম

কিশোর সাহা

নজিরবিহীন সরকারি নির্দেশ!

বছরের শেষ দিনে পুলিশ করবে অনুষ্ঠান। তাই পুলিশের মাইনে থেকে কারও মাথা পিছু ৬০০ টাকা এবং কারও ৪০০ টাকা কেটে নেওয়া হবে বলে সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে!

এমনও হয় নাকি! অথচ রাজ্য সরকারের আওতায় থাকা গভর্মেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)-এর শিলিগুড়ি জোনাল কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশিকায় এমনই দেখা যাচ্ছে। যে নির্দেশের প্রতিলিপি সোশ্যাল মিডিয়ার মারফৎ রেল পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমনকী, নবান্নের নজরেও গিয়েছে বিষয়টি। তা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। ইতিমধ্যেই রেল পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার এক অফিসার বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। সরকারি রেল পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, কোন প্রেক্ষাপটে মাসমাইনে থেকে ৩১ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠান বাবদ এতজনের টাকা কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে তাঁরা শিলিগুড়ির রেল পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলবের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

এই ঘটনায় রেল পুলিশের অন্দরেও ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। কারণ, শিলিগুড়ি রেল পুলিশের জোনাল কর্তৃপক্ষের আওতায় ৬৯২ জন পুলিশ অফিসার ও কর্মী রয়েছেন। গড়ে ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিলেও প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ওঠার কথা। তার উপরে সব পুলিশ অফিসার ও কর্মী যে একবাক্যে ওই টাকা দিতে রাজি তাও নয়। অনেকে ঘনিষ্ঠ মহলে আপত্তিও জানিয়েছেন। কিন্তু, সেই আপত্তি ধোপে টিঁকবে কি না তাঁরা কেউ জানেন না।
রেল পুলিশের একটি সূত্রের খবর, গত ১৮ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি রেল পুলিশের দফতর থেকে ১৬৪০ নম্বর মেমোতে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে সিভিএফ, এনভিএফদেরও মাথা পিছু ৪০০ টাকা করে দেওয়ার কথা বলা রয়েছে। তারল বাইরে সব পুলিশকর্মীদের মাথা পিছু ৬০০ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশও রয়েছে। ওই নির্দেশ দফতরের হেড ক্লার্ক, রিজার্ভ ইন্সপেক্টর, রিজার্ভ অফিসার ও পে ক্লার্কের কাছে পাঠানো হয়েছে। যাতে সকলের মাইনে থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়।

পুলিশের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে এভাবে কি মাইনে থেকে কোনও অনুষ্ঠানের জন্য টাকা কাটার নির্দেশ জারি করা যায়! রেল পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, তাঁরা কর্মজীবনে এমন নির্দেশ অতীতে দেখেননি। বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ি রেল পুলিশ কর্তৃপক্ষের আওতায় থাকা ১৯ মহকুমার স্টেশনের থানায় চলছে নানা গুঞ্জন। রয়েছে ক্ষোভও।

আরও পড়ুন- ‘আমি গরুর মাংস খেতে পছন্দ করি, আপনি কে প্রশ্ন করার?’ বিস্ফোরক সিদ্দারামাইয়া

তবে বর্ষশেষ অথবা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান যদি মিলেমিশে করা হলে তো চাঁদা তোলাই হয়ে থাকে। তা হলে বিতর্ক কোথায় সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। রেল পুলিশের একাংশ জানান, এভাবে মাস মাইনে থেকে কেটে নেওয়ার নির্দেশ অথবা সরকারি সার্কুলার জারি করে টাকা দিতে বলাটা বেনজির ব্যাপার বলেই শোরগোল পড়েছে।

আরও পড়ুন- কোন অপরাধে সৌমেন্দুকে সরানো হলো, জানতে মমতাকে চিঠি সাংসদ দিব্যেন্দুর

Previous articleকোন অপরাধে সৌমেন্দুকে সরানো হলো, জানতে মমতাকে চিঠি সাংসদ দিব্যেন্দুর
Next articleগেরুয়া শিবিরে যোগদানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শাহিনবাগের “বন্দুকবাজ”-কে তাড়ালো বিজেপি