হিম্মত দেখিয়ে শুভেন্দু বলুন না, ‘নন্দীগ্রামেই’ প্রার্থী হচ্ছি! অভিজিৎ ঘোষের কলম

অভিজিৎ ঘোষ

বিজেপি ক্যানেস্তারা পেটাচ্ছে। পেটাক। কিন্তু গেরুয়া পার্টির কৈলাশ থেকে শিব প্রকাশ, যারা নাকি বিজেপিকে বাংলায় ক্ষমতায় আনতে প্রাণপাত করে যাচ্ছেন, তাঁরা ‘ছোট্ট’ একটা হিম্মত কেন দেখাতে পারছেন না? এত কথা, এত অভিযোগ, এত বিস্ফোরণ না হয় তখন সহ্য করা যাবে!

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন। চমকে দিয়েছেন। এক চমকেই চাঙ্গা দুই মেদিনীপুর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীর কলজের জোর থাকলে বুক বাজিয়ে কেন ঘোষণা করছেন না…হ্যাঁ অ্যাকসেপ্ট করলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ। আমিও প্রার্থী হব নন্দীগ্রামে। লড়াই করব। পিছিয়ে যাব না!

প্রশ্ন উঠছে। জবাব দিতে হবে শুভেন্দু অধিকারীকে।

শুভেন্দু যে যুক্তি দিচ্ছেন, তাকে ছেঁদো যুক্তি বলছেন উল্টো দিকে থাকা নেতা-নেত্রীরা। শুভেন্দু বলছেন, বিজেপি শৃঙখলিত পার্টি। জনসভায় প্রার্থী ঘোষণা হয় না। পাল্টা যুক্তি, ২০১৬ সালে এই নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নাম যখন জনসভা থেকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন, তখন এ কথা মনে হয়নি? নাকি তখন মন্ত্রিত্বের হাতছানির কথা ভেবে সে সব নীতিজ্ঞানের কথা জাগেনি! তিনি যে দলের এখন ‘সেবক’, সেই দলের প্রধানমন্ত্রীও তাঁর বারাণসীতে দাঁড়ানোর কথা জনসভা থেকে ঘোষণা করেছিলেন। আঙুল তোলার আগে ইতিহাসটাও একটু জানা দরকার।

কোন শৃঙখলার কথা বলছেন শুভেন্দু? নারদা-সারদায় অভিযুক্তরা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়াটা শৃঙখলিত দলের প্রতিচ্ছ্ববি? এদিক ওদিক থেকে লোক আসছে, আর ঝান্ডা ধরিয়ে দিচ্ছেন। ব্যাস হয়ে গেল বিজেপিকরণ? ঝান্ডা ধরলেই বিজেপির আদর্শ জানা হয়ে গেল? তাহলে দিলীপ ঘোষরা ২৫ বছর ধরে যে সংঘ রাজনীতি করে উঠে এলেন সে সবের কী হবে??

এতদিন লড়াইটা চলছিল কে কতরকম ভাষায় অন্যজনকে বেইজ্জত করতে পারে। কিন্তু শুভেন্দু তো নয়ই, বিজেপির সব বাঘা বাঘা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝতে পারেননি খেলাটা ময়দানে নামিয়ে আনবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই শক কাটেনি গেরুয়া শিবিরের। শুভেন্দু বলছেন, যদি আমায় দাঁড় করায় নেতৃত্ব। যদি কেন? শুরুতেই পাশ কাটানোর সুর কেন? শুভেন্দু আপনি চেয়ে নিন নন্দীগ্রাম। জনসভা থেকে এত বোমা ফাটাচ্ছেন, আর নেতৃত্বকে বলতে পারছেন না, এটা আমার সম্মানের লড়াই, মান-ইজ্জতের লড়াই। নন্দীগ্রাম থেকে আমি লড়ব। যে দলে ছিলেন সেখানে তো আপনার এ অধিকার, আব্দার রাখা হতো মুখ খুললেই। কোন দলে গেলেন, কোন পদে গেলেন যে মঞ্চে পিছনের আসনে আপনাকে খুঁজতে হয়, আর দলের সম্মানের লড়াইয়ের প্রশ্নে একটা কেন্দ্র আপনার চেয়ে নেওয়ার ক্ষমতা পর্যন্ত নেই!

রাজনৈতিক মহল বলছে, আসলে নন্দীগ্রাম, মেদিনীপুর নিয়ে যে লাফালাফিটা চলছিল, সেটা মুখ্যমন্ত্রীর এক টোটকায় জোঁকের মুখে নুন পড়ার মতো নেতিয়ে গিয়েছে। পিছনে তাকিয়ে মনে হচ্ছে ওটা ছিল আসলে শিশু বাঁদরের তিড়িং-বিড়িং। মিডিয়া আছে, তাই হুঙ্কারের কথা শোনা যাচ্ছে। ওটা সরিয়ে নিয়ে মাটির কাছে গিয়ে দাঁড়ালে শোনা যাচ্ছে, ১৮৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাবের হারের কারণের ‘একটি শব্দে’ ব্যাখ্যা!!!

শুভেন্দু প্রশ্ন উঠছে। জবাব আপনাকেই দিতে হবে।

আরও পড়ুন-রামমন্দির নির্মাণে মোদির কাছে চেক পাঠালেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং

Advt

Previous articleআজ থেকে রাজ্যে ৩দিন নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ, একনজরে কর্মসূচি
Next articleআসছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, গ্রেফতারি পরোয়ানার কার্যকর করা নিয়ে চাপে প্রশাসন