পুলিশের চাকরি ছেড়ে অধিকারের লড়াইয়ে, ৪৪ বার জেল খেটেছেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত

একটা সময় দিল্লি পুলিশের(Police) কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন। তবে কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা চোখে দেখে মুখ বুজে থেমে থাকেননি তিনি। চাকরি ছেড়ে মাঠে নেমেছিলেন কৃষকদের অধিকারের দাবিতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক আন্দোলনকে(farmer protest) নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। আজ দিল্লি সীমান্তে কৃষক অধিকারের লড়াইয়ে প্রথম সারির কৃষক নেতা এই রাকেশ টিকাইত(Rakesh Tikait)। তবে লড়াইয়ের ময়দানে বাধা কম আসেনি, তবে সেসবকে উপেক্ষা করে অদম্য জেদকে সঙ্গী করে নির্বিকার ভাবে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে জেল যাত্রাও কম হয়নি তাঁর। ৪৪ বার জেল খেটেছেন ভারতীয় কৃষক ইউনিয়ন (বিকেইউ)-এর(BKU) মুখপাত্র রাকেশ। দিল্লি সীমান্তে(Delhi border) আন্দোলনের জেরে আরও একবার তাঁর নামে দায়ের হয়েছে একাধিক এফআইআর(FIR)।

প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে মিছিল বুমেরাং হয়ে ফিরেছে কৃষকদের কাছে। তুমুল বিক্ষোভ, বিশৃঙ্খলা, অশান্তি, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় লালকেল্লার গম্বুজে পতাকা টাঙানোর ঘটনা আরো বেশি করে বিপাকে ফেলেছে আন্দোলনকারীদের। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের ওপর চাপ ক্রমশ হারাচ্ছে সরকার। ভাঙতে শুরু করেছে কৃষকদের একতা। এমন পরিস্থিতির মাঝেও কোনভাবেই হাল ছাড়তে নারাজ রাকেশ। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আত্মহত্যা করবেন কিন্তু আন্দোলন থেকে একচুলও নড়বেন না। তাঁর কান্না ভেজা চোখ ও অনড় মনোভাব ফের কৃষকদের ফিরিয়ে আনছে লড়াইয়ের ময়দানে।

তবে কে এই রাকেশ টিকাইত?
জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর জেলার সিসাউলি গ্রামে রাকেশের জন্ম ১৯৬৯ সালে। ১৯৮৫ সালে যোগ দেন দিল্লি পুলিশের কনস্টেবলের চাকরিতে। তবে কৃষকদের দুর্দশা চোখের সামনে দেখে চাকরিতে মন টেকেনি। কিন্তু ১৯৯০-র দশকে সেই চাকরি ছেড়ে বাবার সঙ্গে যোগ দেন কৃষক আন্দোলনে। এরপর ক্রমাগতভাবে চলতে থাকে তার জেল যাত্রা। মধ্যপ্রদেশে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ৩৯ দিন জেলে ছিলেন রাকেশ। আখের দাম বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনকে নিয়ে গিয়েছিলেন সংসদ ভবন পর্যন্ত। সেখানে অবস্থান-আন্দোলনের জেরে দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন তিহাড় জেলে ছিলেন তিনি। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ফের কৃষক আন্দোলন ও প্রতিবাদ বিক্ষোভের কারণে গ্রেফতার ও জয়পুর জেলে বন্দী হন তিনি।

আরও পড়ুন:পিছু হটবেন না, ভয় পাবেন না আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি : রাহুল

তবে কৃষক আন্দোলনের ক্ষেত্রে রাকেশের বাবাও কম ছিলেন না। তার বাবা মহেন্দ্র টিকাইত ছিলেন বিকেইউ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। একাধিক আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরেই সংগঠন এর প্রেসিডেন্ট হন মহেন্দ্র। বাবার মৃত্যুর পর বিকেইউ-এর জাতীয় মুখপাত্র হন রাকেশ।

Advt

Previous articleদিল্লির ইজরায়েলি দূতাবাসের কাছে বিস্ফোরণে চাঞ্চল্য
Next articleছবি এঁকে রাজ্যে তাক লাগলো মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের খুদে মনোজিৎ